সুন্দরগঞ্জে তিস্তায় বাঁশের সাঁকো তৈরি আটকে ‘অর্থ অভাবে’

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তার শাখা নদীর ওপর ৩০০ ফুটের বাঁশের সাঁকো নির্মাাণ করছেন স্থানীয় লোকজন।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2020, 05:08 AM
Updated : 22 June 2020, 06:14 AM

সাঁকো তৈরির উদ্যোক্তা তালুক বেলকা গ্রামের আইয়ুব আলী জানান, উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা গ্রাম ও পাশের দহবন্দ ইউনিয়নের উত্তর ধুমাইটারি গ্রামের লোকজনদের অর্থায়নে সাঁকোটির নির্মাণ কাজ ৮০ ভাগ সম্পন্ন হলেও বাকি কাজ ‘অর্থের অভাবে’ আটকে রয়েছে।

তিসি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মানুষ চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছিল। বিশেষ করে কেউ অসুস্থ হলে কষ্টের শেষ থাকতো না। তাই মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ৩০০ ফুটের বাঁশের সাঁকোটি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়।”

তালুক বেলকা গ্রামের লোকজন জানান, তাদের গ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার শাখা নদীর উপর কোনো সাঁকো না থাকায় বেলকা ও উত্তর ধুমাইটারি গ্রামের লোকজনদের সারা বছরই নৌকায় পার হয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে হয়। এই অবস্থায় নদীর উপর ‘স্বেচ্ছাশ্রমে’ বাশের সাঁকো তৈরির পরিকল্পনা করেন এ এলাকার  লোকজন।

ধুমাইটারী ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সেলিম মিয়া বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হচ্ছে। তার জন্য কেউ দিয়েছেন বাঁশ, কেউ দিয়েছে টাকা, আবার কেউ দিয়েছেন কাঠ। আর হাতে হাত মিলিয়ে সহযোগিতাও করছেন তারাই।

“ইতোমধ্যে সাঁকোর শতকরা ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অর্থাভাবে সাঁকোর কাঠামো তৈরির অবশিষ্ট কাজ আটকে রয়েছে। সাঁকোটি নির্মাণ হলে তালুক বেলকা ও উত্তর ধুমাইটারি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের ত হবে। এ ছাড়া ধুমাইটারি ফাজিল মাদ্রাসা ও পঞ্চানন্দ আর ইউ দাখিল মাদ্রাসার পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর যাতায়াত সুবিধা হবে।”

ওই এলাকার মো. রোকন বলেন, তিস্তার শাখা নদীটি বর্ষাকালে ২০ ফুটের বেশি পানি থাকে। ফলে মাদ্রাসায় যেতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পারাপারের জন্য অনেক সময় নৌকা পাওয়া যায়না। এতে করে শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকতে পারে না। তাই সাঁকো নির্মাণ হলে মাদ্রাসায় যাতায়াত সুবিধা হবে।”

সাঁকো না থাকায় চলাচলে ভোগান্তির কথা জানিয়ে ধুমাইটারি ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, “বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।কারণ  নদী পারাপারের সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।

“সাঁকো হলে মানুষ আপাতত সমস্যার সমাধান হতো। কিন্তু বর্তমানে অর্থাভাবে কাজ বন্ধ আছে। সাঁকো নির্মাণ সময়ের ব্যাপার। সাঁকোটি হলে সমস্যার প্রাথমিক সমাধান হতো।“

এ বিষয়ে বেলকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ বলেন, “সাঁকো নির্মাণে সহায়তা দিয়েছি। এছাড়া তিস্তার শাখা নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদের সভায় অনেকবার প্রস্তাব করেছি। তবুও কাজ হচ্ছে না।”

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার এল জি ই ডি র প্রকৌশলী মো. আবুল মুনছুর বলেন, এই মূহুর্তে এ এলাকায় সেতু নির্মাণের কোনো কর্মসূচি নেই। তবে সেতু নির্মাণে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে সেতু নির্মাণ করা হবে।