আপপাড়া শুরু হলেও এখনও জেলার বাইরের পাইকাররা না আসায় আমের নায্যমূল্য পাবেন কিনা ও আমের ঠিকমতো বাজারজাত সম্ভব হবে কিনা তা ভেবে চিন্তায় রয়েছেন জেলার প্রায় ৫০ হাজার আমচাষি।
গত বছর এ জেলায় ১১শ কোটির বেশি টাকার আম বিক্রি হয়েছে। এবছর জেলায় সাত হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আম চাষ হয়েছে।
তবে কয়েকদফা ঝড় ও করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারি নানা সুযোগ দেওয়ার কারণে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়বেন না বলে প্রশাসন মনে করছে।
গত বৃহস্পতিবার জেলার পোরশা উপজেলার মিনা বাজার এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে গাছ থেকে আম পাড়ার উদ্বোধন করা হয়েছে।
পোরশা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মো. মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী আম পাড়া উদ্বোধন করেন।
পোরশা উপজেলার মিনা বাজার এলাকার আমচাষি ও বাগান মালিক মাসুদ পারভেজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত জেলার বাইরের পাইকাররা না আসায় নায্যমুল্য প্রাপ্তি ও বাজারজাত আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় জেলার প্রায় ৫০ হাজার আম চাষি ও বাগান মালিক।
সাপাহারের আমচাষি সাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অন্যান্য বছর এ সময়ে আমাদের অর্ধেক আম বাইরের পাইকারের কাছে বেচাকেনা হয়ে থাকে; কিন্তু এ বছর এখনও কোনো পাইকার আসেননি। যদি বাইরের পাইকাররা আসতে না পারেন তাহলে আমাদের খরচই উঠবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।”
তবে আমের আড়তদার সমিতির জেলা সভাপতি কার্ত্তিক সাহা আমচাষিদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, নওগাঁর আম স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় ও সুমিষ্ট হবার কারণে সারাদেশে জেলার গোপালভোগ, ল্যাংরা, আমরুপালী, নাকফজলী, ফজলী, আশ্বিনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
জেলার ১১ উপজেলায় আম বাগান করা হলেও পোরশা, সাপাহার, পত্নীতলা ও বদলগাছি উপজেলায় ব্যাণিজ্যিকভাবে আম উৎপাদন করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
সিরাজুল ইসলাম জানান, গত বছর জেলায় সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে সোয়া তিন লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়; যা বিক্রি হয়েছে ১১ শ কৌটি টাকারও বেশি দামে। এবছর জেলায় সাড়ে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।
“এ কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি না হলে আমচাষিরা আমের নায্যমূল্য পাবেন বলে আশা করি।”
সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে এ বছর ও আম কেনাবেচা হবে এবং বাইরের পাইকাররা যেন নির্বিঘ্নে আসা যাওয়া করতে পারেন তার সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। একই সাথে এ বছর আপস এবং মোবাইলের মাধ্যমে আম কেনাবেচারও উদ্দোগ নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে জেলার বাইরের কোনো পাইকার অডার করলে সেখানে আম পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।