এরই মধ্যে কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া ইউনিয়নের পাথরগ্রামের এ নির্যাতনের ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনার কথা বলে কাশিয়ানী থানার রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খন্দকার আমিনুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এ ঘটনার পর দুই পক্ষ যোগাযোগ করে শুক্রবার পর্যন্ত সময় নিয়েছে। এর মধ্যে তারা নিজেরা কোনো মীমাংসায় পৌঁছাতে না পারলে এ ঘটনায় মামলা করা হবে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
ঘটনার পেছনের কারণ হিসেবে স্থানীয়রা জানান, কাশিয়ানী উপজেলার পাথরগ্রামের এক খণ্ড জমি পূর্বপুরুষ থেকে ভোগদখল করে আসছেন দিনমজুর তরুণী রায়ের পরিবার। গত রোববার ভোরে হঠাৎ প্রতিবেশী আশুতোষ বিশ্বাস জমির মালিকানা দাবি করে বেশ কিছু শ্রমিক নিয়ে মাটি ফেলে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেন। রাস্তার মুখে থাকা তরুণী রায়দের বাড়ির একটি শৌচাগার ভেঙে ফেলেন তারা।
এ সময় জমি দখল করে রাস্তা নির্মাণে বাধা দিতে গেলে আশুতোষ ও তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তরুণী রায়ের পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন বলে তাদের অভিযোগ।
এতে তরুণী রায় ও তার স্ত্রী সুষমা রায়, ছেলে তপন রায়, রপন রায় ও মেয়ে চন্দনা রায়সহ সাতজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নেন বলেও জানান স্থানীয়রা।
এদিকে, ‘রবিন বিশ্বাস’ নামে এক আইডি থেকে ফেইসবুকে আপলোড করা এ মারামারির ভিডিও ছিড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা হতে শুরু করে। ‘নিরীহ পরিবারকে নির্যাতনে’ জড়িত প্রভাবশালী আশুতোষকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানায় কেউ কেউ।
ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তরুণী রায়ের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও ভাতিজা সবাইকে গাছের ডাল দিয়ে পেটাতেও দেখা যায়।
তরুণী রায় অভিযোগ করে বলেন, “পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি পূর্বপুরুষ থেকে ভোগদখল করে আসছি। হঠাৎ প্রতিবেশী আশুতোষ বিশ্বাস জমির মালিকানা দাবি করে লোকজন নিয়ে জমির ওপর দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করে।
“আমরা এ গ্রামে মাত্র দু’টি হিন্দু পরিবার বসবাস করি। আমাদের লোকজন নেই। ওরা অনেক প্রভাবশালী এবং ওদের বংশে অনেক লোকজন আছে। তাই আমরা এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গ্রামের একাধিক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তরুণী রায়কে নিরীহ পেয়ে আশুতোষ বিশ্বাস ও তার লোকেরা যে অমানবিক নির্যাতন করেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অমার্জনীয় অপরাধ।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আশুতোষ বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
“আমরা আমাদের কেনা জমিতে রাস্তা করতেছি। আমরা পশ্চিমপাশ দিয়ে কিনেছিলাম, কিন্তু দলিল করার পর দেখি আমাদের পূর্বপাশ দিয়ে লিখে দিয়েছে।”