‘অবরুদ্ধ’ পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুটি আইসোলেশন কেন্দ্র

মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পদ্মা সেতুর পুরো প্রকল্পটি অবরুদ্ধ করে রেখে কাজ চালানো হচ্ছে।

ফারহানামির্জা, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 04:38 AM
Updated : 25 April 2020, 05:08 AM

বুধবার প্রকল্প এলাকায় চালু করা হয়েছে ‘কোভিড-১৯ আইসোলেশন সেন্টার’ নামে দুটি ইউনিট। এতে সেতুর কেউ আক্রান্ত হলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।

সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রজ্জব আলী জানান, মাদারীপুর জেলার শিবচরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর গত ২০ মার্চ থেকেই প্রকল্পটি অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়। প্রকল্প এলাকায় ঢোকা বা এখান থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। জরুরি প্রয়োজন হলে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।

রজ্জব বলেন, প্রকল্পের কারও উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার জন্য এখানে ‘কোভিড-১৯ আইসোলেশন সেন্টার’ দুটি স্থাপন করা হয়েছে। পদ্মার দুই তীরে প্রকল্প এলাকার ভেতরে ১২ বেড করে ২৪ বেডের এই দুটি কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।

একটি কেন্দ্র মাওয়া প্রান্তের দোগাছিতে আর অন্যটি হল জাজিরা প্রান্তে। প্রস্তুতি শেষে বুধবার এ দুটি কেন্দ্র চালু করা হয়।

পদ্মা সেতু স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শক মাহমুদ হোসেন ফারুকী বলেন, দুটি সেন্টারের প্রতিটিতে দুইজন চিকিৎসক, দুইজন নার্স ও ওয়ার্ডসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সব চিকিৎসা সামগ্রীও বসানো হয়েছে। এখানে আইসিইউ না থাকলেও উন্নতমানের ব্যবস্থা রয়েছে। রাখা হয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্সও। জরুরি প্রয়োজনে রোগীকে লাইফ সার্পোট দিয়ে ঢাকায় পাঠানো যাবে।

সেন্টার দুটি চালুর আগে চিকিৎসাকর্মীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় আসোলেশনে রেখে তাদের পরীক্ষা হয়। নেগেটিভ আসার পর সরাসরি পদ্মা সেতুর গাড়িতে করে আনা হয় তাদের। পরিবারের সঙ্গে তাদের দেখা-সাক্ষাতের পর্বও আগেই শেষ হয়েছে।

“কোনোভাবেই কেউ যেন সংক্রমিত না হন, বা হলেও যেন দ্রুত সব পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেজন্য এই সর্তকর্তা।”

এছাড়া প্রকল্প এলাকার আওতায় থাকায় মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার সিভিল সার্জনদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী রজ্জব আলী।

তিনি বলেন, সিভিল সার্জনরা প্রয়োজন মনে করলে দুটি সেন্টারে একটি করে আইসিইউ বেড স্থাপন করা হবে। ভেন্টিলেশন বেড স্থাপনের ব্যাপারেও আগ্রহ রয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের।

সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই সেতুর ২৮তম স্প্যান বসানো হয়। এর মধ্য দিয়ে সেতুর চার হাজার মিটারের বেশি দৃশ্যমান হয়েছে। এখন ২৯তম স্প্যান বসানোর প্রস্তুতি চলছে।

মোট ৪২টি পিয়ারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দোতালা এই সেতুটি কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে।