কুড়িগ্রামে গভীর গর্তে মাটিচাপা শ্রমিককে জীবন্ত উদ্ধার

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় সেপটিক ট্যাংকের গভীর গর্তে কাজ করার সময় মাটিচাপা পড়া দুই শ্রমিককে জীবন্ত উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2020, 03:22 PM
Updated : 24 April 2020, 03:22 PM

শুক্রবার ছিনাই ইউনিয়নের ছিনাইহাট বড়গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মনোরঞ্জন সরকার জানান।

আহতরা হলেন একই গ্রামের মজুল হকের ছেলে আমিনুল ইসলাম (২৮) ও নব্বার আলীর ছেলে মোক্তার আলী (২৮)। আমিনুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ছিনাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুল হক নুরু জানান, সকালে ছিনাইহাট বড়গ্রামের মোজাম্মেলের বাড়িতে কাজ করছিলেন একই গ্রামের আমিনুল ইসলাম ও মোক্তার আলী। তারা ওই বাড়িতে সেপটিক ট্যাংকের জন্য ২০ ফুট গর্তের নিচে ইট বসানোর কাজ করছিলেন।

“বেলা সোয়া ১১টার দিকে হঠাৎ উপরের দিকের মাটি ধসে পড়লে নিচে কর্মরত শ্রমিক আমিনুল ইসলামের গলা পর্যন্ত মাটি চাপা পড়ে। এ সময় আমিনুলকে উদ্ধার করতে নিচে নামেন মোক্তার আলী। ওই সময় দ্বিতীয় দফা মাটি ধসে মোক্তার গর্তে আটকে পড়েন।”

সাদেকুল হক আরও জানান, স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ১০ সদস্যের একটি টিম এসে উদ্ধার অভিযানে নামে।

“টানা সাড়ে ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় বিকালে মাটিচাপা দুই শ্রমিককে জীবন্ত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।”

কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা খুরশিদ আনোয়ার জানান, সেফটিক ট্যাংকের গর্তে একজন গলা পর্যন্ত মাটিচাপা পড়েন। তাকে উদ্ধার করতে নেমে আরেকজনও মাটির নিচে আটকে পড়েন।

উদ্ধারের বর্ণনা দিয়ে খুরশিদ আনোয়ার বলেন, প্রথমে চেনপুলি দিয়ে মোক্তার আলীকে উদ্ধার করা হয়। পরে আমিনুলকে উদ্ধার করতে তার শরীরের চারদিক থেকে বালতি দিয়ে কোমর পর্যন্ত মাটি সড়ানো হয়।

“এ সময় আমিনুলকে চেনপুলিতে বেঁধে তোলার সময় মাঝখান পর্যন্ত ওঠার পর বেল্ট ছিঁড়ে নিচে পড়ে যান আমিনুল। পরে বেল্ট এনে তোলার চেষ্টা করলে বেল্ট ছিঁড়ে আবার পড়ে যান। শেষে দড়ি দিয়ে বেঁধে আমিনুলকে তোল হয়।”

এটি তাদের কর্মজীবনের নতুন অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করেন কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মনোরঞ্জন সরকার ও জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা খুরশিদ আনোয়ার।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রেদওয়ান ফেরদৌস সজীব জানান, আহত আমিনুলকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত। পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও কয়েকদিন লাগবে।