সব রোহিঙ্গা ক্যাম্প অবরুদ্ধ কক্সবাজারের আওতাভুক্ত

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে অবরুদ্ধ কক্সবাজারের আওতায় উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পও থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2020, 02:26 PM
Updated : 9 April 2020, 02:26 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ছাড়া অন্য সবধরনের কর্মসূচি ‘লকডাউনের’ মাধ্যমে বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

“এছাড়া লকডাউন ঘোষণার কারণে বিনা প্রয়োজনে যে কেউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশ বা বের হতে পারবে না।”

বুধবার পুরো কক্সবাজার জেলাকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে জেলায় বাইরে থেকে ঢোকা এবং ভেতর থেকে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলার বাসিন্দারা ‘লকডাউনের আওতায় থাকবে বলে জানান তিনি।

এর আগে গত মাসে কক্সবাজারের সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

শরণার্থী কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, “বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক পুরো জেলাকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এতে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পও এই ঘোষণার আওতায় পড়েছে। বলতে গেলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে গত ১১ মার্চ থেকে অঘোষিতভাবে লকডাউন চলছে।”

তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ছাড়া অন্য সবধরণের কর্মসূচি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বন্ধ রয়েছে। সেই সাথে যেকোনো ধরনের যানবাহনসহ বিদেশি নাগরিকদেরও ক্যাম্পগুলোতে যাতায়ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

“যে কেউ বিনা প্রয়োজনে ক্যাম্পে প্রবেশ বা বাইরে বের হতে পারবে না।”

শরণার্থী কমিশনার আরও বলেন, “জরুরি প্রয়োজনে যেসব যানবাহন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়তের দরকার সেগুলোতে আরআরআরসি অফিসের স্টিকারযুক্ত থাকবে। এসব স্টিকারযুক্ত যানবাহনগুলোই শুধু ক্যাম্পের অভ্যন্তরে যাতায়তের সুযোগ দেওয়া হবে।”

মাহবুব তালুকদার জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ক্যাম্পের বিভিন্ন প্রবেশ পথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ক্যাম্পের অভ্যন্তরে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা টহল জোরদার রেখেছেন।

পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে লকডাউনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

এদিকে, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন মাহবুবর রহমান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থাপিত ল্যাবে ২৮ জনের সংগৃহীত নমুনার পরীক্ষা করা হলেও যে করোনাভাইরাস রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়নি। সকলের পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল পাওয়া গেছে।

এছাড়া করোনা পরীক্ষায় ১০২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও জেলায় এখনও কেউ রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়নি বলে জানান সিভিল সার্জন।

এর আগে এক বৃদ্ধ নারী করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত হলেও চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি অবস্থান করছেন জানিয়ে মাহবুবর রহমান বলেন, “পর্যটন নগরী কক্সবাজার এখনও করোনামুক্ত রয়েছে। এখন সকলের দায়িত্ব নিজ নিজ বাড়ি-ঘরে অবস্থান নিয়ে সফলতা ধরে রাখা।”