গৃহবধূর চুল কর্তন, আসামি না ধরতে পারায় আদালতের ক্ষোভ

সিরাজগঞ্জে এক গৃহবধূর চুল বটি দিয়ে কর্তনের মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2019, 02:04 PM
Updated : 8 Dec 2019, 02:04 PM

রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

সকালে আইনজীবী ইসরাত হাসান সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি খবর আদালতের নজরে আনলে এই আদেশ দেওয়া হয় বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদ বাশার জানান।

উল্লাপাড়ার উপজেলার দুই সন্তানের এক জননী তার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেন এক সপ্তাহ আগে। এখনও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।

এ ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে আদালত সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উল্লাপাড়া থানাকে নির্দেশ দিয়েছে বলে বাশার জানান।

মাহমুদ বাশার বলেন, “আদালত বলেছে-নেতাদের কথায় পুলিশ ওঠাবসা করলে আইনের শাসন থাকে না। সংবাদ মাধ্যম আসামিকে খুঁজে পেলেও পুলিশ কেন তাদের খুঁজে পায় না?”

উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে গত ২ ডিসেম্বর এই গৃহবধূ মামলা করেছেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন গজাইল গ্রামের মোজাহারের ছেলে মুনসুর (৩৮), বাহের প্রামাণিকের ছেলে আব্দুস সালাম (৪৫), নাসির উদ্দিন (৪০) ও শহিদুল ইসলাম (৩২)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় ওই নারী তার এক আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার জন্য ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের খোঁজে বের হন। পথে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ ও তার চার সহযোগী ওই নারীর পথরোধ করেন।

অভিযোগে বলা হয়, এ সময় গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাকে ওই নারীকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন রশীদ ও তার সহযোগীরা। এতে গ্রামের লোকজন ছুটে এলে তাদের সামনে তাকে বিবস্ত্র করে মারপিট করেন এবং পরে কয়েকশ লোকের সামনে বটি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে দেন রশীদ ও তার সহযোগীরা।  

উল্লাপাড়া মডেল থানার অফিসার ওসি শাহীন শাহ পারভেজ জানান, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ নিজে বাদী হয়ে ২ ডিসেম্বর উল্লাপাড়া মডেল থানায় ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও তার চার সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন।

ওসি শাহীন শাহ পারভেজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই নারী থানায় আসার পরই মামলা নেওয়া হয়েছে। ওই সময় তাৎক্ষণিকভাবে আসামিদের ধরতে গেলেও তাদের পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশের দুইটি টিম তাদের গ্রেপ্তারে জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।