জেলার সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের পশ্চিম নিজড়া গ্রামের সরদারপাড়া জাঙ্গাল ‘কবরস্থানের জায়গা দখল’ করে ‘রেণুকা কিন্ডার গার্টেন’ নামে স্কুলাটি এক পুলিশ কর্মকর্তা নির্মাণ করেছেন।
রেণুকা কিন্ডার গার্টেনের সহকারী শিক্ষক জয়ন্তী হীরা জানান, সেখানে প্লে থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের পড়ানো হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ‘প্রায় ১৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত’ এই স্কুলের সাইনবোর্ডে প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হিসেবে সফিকুল ইসলাম সরদার (বদর) নাম রয়েছে।
পুলিশ বাহিনীতে সফিকুল বর্তমানে উপ পরিদর্শক পদে চাকরি করছেন বলে জানিয়েছেন কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন মিনা।
তার অভিযোগ, “সফিকুলকে কবরস্থানের জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হলেও তিনি প্রভাব খাটিয়ে তা দখলে রেখে স্কুল পরিচালনা করে আসছেন।”
নাসির জানান, প্রায় তিন বছর আগে কবরস্থান কমিটির পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর কবরস্থানের জায়গা থেকে স্কুলটি উচ্ছেদের আবেদন করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে’ সদর সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বলে জানান তিনি।
“প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্কুল সরিয়ে নেওয়ার কথা বললে, স্কুল কর্তৃপক্ষ বারবার সময় চেয়ে কালক্ষেপণ করছেন।”
করবস্থানের পাশে সফিকুলদের ‘সরদার’ পারিবারের লোকজনের জমি রয়েছে বলে জানান নিজড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য সাঈদুর রহমান রাঙ্গা।
“তবে পরে জমি পরিমাপ করে দেখা গেছে স্কুল সম্পূর্ণই কবরস্থানের জায়গায় রয়েছে।”
এরপর কবরস্থানের জায়গা থেকে স্কুল সরিয়ে নেওয়ার কথা উঠলে “তারা আজ সরাই, কাল সরাই বলে কালক্ষেপণ করছেন। “
ওই স্কুলটি একটি নিজড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘একশ’ গজের মধ্যে’ দাবি এলাকাবাসীর।
ওই নিজড়া সরকারি স্কুলের মধ্যে নিজের জমি থাকার দাবি করে কিন্ডার গার্টেনটির প্রতিষ্ঠাতা সফিকুল বলেন, “সেখানে আমি ২০ বছর আগে স্কুল করতে চেয়েছিলাম কিন্তু ‘স্কুলের জায়গায় স্কুল করা যাবে না’ এ অজুহাতে গ্রামবাসী সে সময় আমাকে কবরস্থানের ডোবার মধ্যে স্কুল করার অনুমতি দেয়।
“সেখানে আমি মাটি ফেলে ভিটা উঁচু করে স্কুল প্রতিষ্ঠা করি।”
“তারা যেখানে জায়গা দেবে সেখানেই আমি স্কুল নিয়ে যাব।”
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদিকুর রহমান খান জানান, তদন্তে কবরস্থানের জায়গা কিন্ডার গার্ডেনের দখলে রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনসহ আরো অন্যান্য বিষয় স্কুলের সাথে জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
“তবে কোন অবস্থাতেই কবরস্থানের জায়গায় স্কুল থাকতে পারবে না।”