ফতুল্লায় শিশু ‘হত্যা’, মায়ের স্বীকারোক্তি

নারায়ণগঞ্জে দেড় বছর ছেলেকে চার তলার ছাদ থেকে নিচে ফেলে হত্যার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন তার মা, যিনি মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়ছেন স্বজনরা।

মঙ্গলবার শিশুটির মা রোকসানা আক্তার নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নুরুন নাহারের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান রোকসানার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পাগলা পশ্চিম নন্দলালপুরের একটি বাড়ির চারতলা ছাদ থেকে পরে আহত হয় নুরুজ্জামান মারুফ ও রোকসারা আক্তারের আড়াই বছরের ছেলে আশফাক জামান জাহিন। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার নিহত শিশুর চাচা জাহিদুজ্জামান খান বাদী হয়ে তার মা রোকসানাকে একমাত্র আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সোমবার বিকালে পাগলা পশ্চিম নন্দলালপুর এলাকার আমান উল্লাহ প্রধানের বাড়ির চারতলা ছাদ থেকে আশফাক জামান জাহিন নিচে পড়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শিশুটির বাবা নুরুজ্জামান মারুফ বলেন, পাঁচ বছর আগে পারিবারিকভাবে একই এলাকার রোকসানা আক্তারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার স্ত্রী রোকসানা মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন। বহু চিকিৎসা করেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।

নুরুজ্জামান বলেন, সোমবার বিকালে তার বড় মেয়ের ফোন পেয়ে শহরের চাষাড়ায় পপুলার হাসপাতালে ছুটে যান তিনি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার স্ত্রী রোকসানা তাদের ছেলে জাহিনকে বাড়ির ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিয়েছেন।

“প্রথমে তাকে স্থানীয় পুলার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জাহিনকে প্রায় নিথর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, শিশুর মায়ের বিরুদ্ধে শিশুর চাচা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তার শিশুর মা রোকসানা মঙ্গলবার বিকালে আদালতে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে নিজের সন্তানকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ওসি আসলাম আরও বলেন, “নিহত শিশুটির মা মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের পক্ষ থেকেও সেটা দাবি করা হচ্ছে। তবে আইনের কাছে সব অপরাধীই সমান। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।”