গারো উৎসব রংচুগালা ‘শেরপুরে এবারই প্রথম’

গারোদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রথমবারের মত শেরপুরে আয়োজন করা হয়েছে ‘রংচুগালা’ উৎসব।

শেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2019, 07:32 AM
Updated : 12 Oct 2019, 07:32 AM

‘রংচুগালার’ অর্থ-চাল থেকে তৈরি চিড়া ফসলে মাঠে ছিটিয়ে দেওয়া। বাড়তি ফসলের প্রার্থনা ঘিরে গড়ে ওঠা গারো জনগোষ্ঠীর উৎসব ‘রংচুগালা’।

শুক্রবার শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়ম নগর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয় এই উৎসব।

গারো সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, ফসলের মাঠে ফসল বৃদ্ধিতে ফসলের দেবতা ‘মিসিসিলং’ ও সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ প্রয়োজন। তাই বাড়তি ফসল উৎপাদনের আশায় শত শত বছর ধরে চলে আসছে ‘ফসলের দেবতা ও সৃষ্টিকর্তা’কে খুশি করতে রংচুগালা উৎসব।

সৃষ্টিকর্তা খুশি হয়ে তাদের ফসল উৎপাদন বাড়িয়ে দেবে এই বিশ্বাসকে সামনে রেখে আচার আনুষ্ঠনিকতা সম্পাদন করেন গারোদের প্রধান নেতা-যাকে গারো ভাষায় বলা হয় ‘খামাল’।

স্থানীয় ‘ইয়ং মার্চেন ক্রিশ্চান এসোসিয়েশন’ (ওয়াইএমসিএ) এবং বাংলাদেশ গারো ছাত্র সমাজ (বাগাছাস) ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখা আয়োজিত এ উৎসবের মূল পর্বে প্রার্থনা ও আচার কাজ সম্পন্ন করেন বাংলাদেশের গারোদের ‘খামাল’ জনসন মৃ।

এ উৎসব শত শত বছরের ঐতিহ্যের হলেও গারোদের প্রধান জনসন মৃ, বাগাছাস ঝিনাইগাতী উপজেলা শাখার সভাপতি অনিক চিরান, আদিবাসী নেতা  অঞ্জন ম্র্রং ও ইয়াং মার্চেন্ট ক্রিশ্চান এসাসিয়েশনের ঝিনাইগাতী শাখার সভাপতি পবিত্র ম্র্রং জানান, শেরপুরে এবারই প্রথম এই উৎসব আয়োজন করা হলো।

দেবতাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং আচার পালন শেষে শুক্রবার রাতে স্থানীয় শিল্পীরা ও বাংলাদেশের প্রথম আদিবাসীদের প্রমিলা ব্যান্ড দল ‘এফ-মাইনর’, ‘জুমাং’ ও ‘অগোছাল’ নামের তিনটি দল সংগীত পরিবেশন করে।

ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি ও সাংস্কৃতির এ উৎসবে ঐহিত্যবাহী ও ব্যান্ড সংগীত পরিবেশন করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে স্থানীয় শিল্পীদের পাশপাশি বাংলাদেশের প্রথম আদিবাসীদের প্রমিলা ব্যান্ড দল ‘এফ-মাইনর’ এবং ‘জুমাং’ ও ‘অগোছাল’ নামের তিনটি ব্যান্ড দল গারো ও বাংলা ভাষায় সংগীত পরিবেশন করে।

এছাড়া গারো ঐহিত্যের নৃত্য পরিবেশনও করা হয়।

মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শেরপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবু তাহের।

এ সময় বাগাছাস নেতৃবৃন্দ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার নেতারাসহ ছাড়াও স্থানীয় কয়েশ’ আদিবাসী ও বাঙালি এ উৎসব উপভোগ করেন।