রাবি উপাচার্যের ‘জয় হিন্দ’ বলার ব্যাখ্যা প্রশাসনের

একটি অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের ‘জয় হিন্দ’ বলার ব্যাখ্যা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2019, 03:32 PM
Updated : 30 Sept 2019, 03:58 PM

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমে এ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলার পর ‘জয় হিন্দ’ শ্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।

খবরটি কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রচারিতও হয়।

এরপর গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদ ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপাচার্যকে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানায়।

একই কারণে উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের গ্রুপ সাদা দল।

এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যাখ্যা এল।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাঠানো ব্যাখ্যায় বলা হয়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সভাপতির বক্তৃতায় উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান ‘জয় হিন্দ’ বলেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে সংবাদটি ‘অত্যন্ত চতুর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিকৃত করে’ উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করে।

এতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক ইতিহাসবিদসহ রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব ভাটি উপস্থিত ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “উপাচার্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সর্বাঙ্গীন সহযোগিতা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধকালীন এক কোটি শরণার্থীর খাদ্য-বাসস্থানের যোগান দান, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতাকরণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অকুণ্ঠ সমর্থনজ্ঞাপন, সর্বোপরি বিশ্বজনমত সৃষ্টির দ্বারা স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তকরণে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও তার সরকারসহ সে দেশের জনগণের প্রতি অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তাদের এই সহযোগিতার জন্য ভারত রাষ্ট্রের দীর্ঘায়ু কামনা করতে গিয়ে উপাচার্য অতি প্রাসঙ্গিকভাবেই ‘জয় হিন্দ’ শব্দযুগল ব্যবহার করেন এবং তা তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ উচ্চারণের পর বলেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়।

কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান স্থিতিশীল অবস্থা ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন-অগ্রগতি রোধে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ধরনের বিভ্রান্তি ও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করে।