পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ভারি বর্ষণে পাহাড়ের মাটি ধসে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে; যাদের একজনের লাশ রোববার উদ্ধার করা হয়েছে।
Published : 14 Jul 2019, 06:43 PM
শনিবার সকালে চিম্বুক পাহাড়ে ক্রামাদি পাড়ায় এবং সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মধুঝিরি আগা পাড়ায় রাত ১টার দিকে এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদী তীরবর্তী স্থান এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য সিংইয়ং ম্রো জানান, সকালে লামা সদরের মধুঝিরি এলাকা থেকে নুর জাহান বেগমর (৬৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে শনিবার দুপুরে উদ্ধার করা হয় জুম চাষি মেনফং মেনফং ম্রো (৩৫) এর লাশ।
এ ঘটনায় তার ছেলে ইরান ও ছেলে বউ ফাতেমা বেগম আহত হলে তাদেরকে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় বলে জানান তিনি।
এদিকে গত শনিবার থেকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বান্দরবানের নদী তীরবর্তী স্থান এবং নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে বলে বান্দরবান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর জানান।
বান্দরবান সদর ও লামা উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
“ফলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাঙ্গু নদীর উজানের বৃষ্টিতে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।”
বান্দরবান পৌরসভার নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল থুইসিং মারমা লুবু বলেন, “বান্দরবান শহরের শেরেবাংলা নগর, আর্মিপাড়া, ইসলামপুর, ফায়ার সার্ভিস এলাকা ও বালাঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকা ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।পাকা ভবনগুলোর দোতালা থেকে উপরের দিকে আশ্রয় নিতে গিয়ে আটকা পড়েছেন অনেকেই।”
বান্দরবান মৃত্তিকা সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যেখানে সাঙ্গু নদীর বৃষ্টির সহনশীল মাত্রা ১২০ মিলিমিটার।
স্থানীয়রা জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মোটর চালাতে না পারায় বিশুদ্ধ পানির সংকট তৈরি হয়েছে। নেটওয়ার্ক বিঘিœত হওয়ায় জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে খাদ্যসামগ্রী এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে।
জেলায় ১৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার সরবহরা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।