বানিয়ারচর গীর্জায় বোমা বিস্ফোরণ: ১৮ বছরেও অভিযোগপত্র হয়নি

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বানিয়ারচর ক্যাথলিক গীর্জায় বোমা বিস্ফোরণের মামলার অভিযোগপত্র ১৮ বছরেও দেওয়া হয়নি।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2019, 03:44 PM
Updated : 3 June 2019, 03:44 PM

বারবার বদলি হয়েছেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। বর্তমানে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে। এ দীর্ঘসূত্রতার কারণে নিহতদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।

২০০১ সালের ৩ জুন বানিয়ারচর ক্যাথলিক গীর্জায় সাপ্তাহিক প্রার্থনা চলাকালে বোমা বিস্ফোরণে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ১০ জন নিহত হন; আহত হন অর্ধশতাধিক।  

নিহতরা হলেন রক্সিড জেত্রা, বিনোদ দাস, মন্মথ সিকাদার, সঞ্জীবন বাড়ৈ, পিটার সাহা, অমর বিশ্বাস, সতীশ বিশ্বাস, ঝিন্টু মন্ডল, মাইকেল মল্লিক ও সুমন হালদার।

নিহত সুমন হালদারের বাবা শুখরঞ্জন হালদার বলেন, এ ঘটনায় ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২২ বার বদল হয়েছে। এখনও অভিযোগপত্র দেয়নি সিআইডি। ফলে বিচার শুরু হয়নি।

“আমরা বিচারের জন্য আর কত কাল অপেক্ষা করব? আমি দ্রুত এ বোমা হামলার বিচার চাই।”

এ ঘটনায় মুকসুদপুর থানায় ওই গির্জার তৎকালীন ফাদার পিতাঞ্জা মিম্মো বাদী হয়ে হত্যা ও পিটার বৈরাগী বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেন।

মামলা দুইটিতে ৩৭ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দুইটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।

দুই মামলার প্রধান আসামি হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান মুন্সির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য একটি মামলায়। এছাড়া ১২ আসামি জামিনে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন ছয়জন এবং কারাগারে রয়েছেন সাতজন।

গীর্জার ফাদার ফরেজা রোম রিকো গমেজ বলেন, নিহতদের স্মরণে সোমবার গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা, শোক শোভাযাত্রা, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জালন, সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া বিকালে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “ঘটনার ১৮ বছর পার হলেও এ ঘটনার বিচার শুরু করা হয়নি। নিহতদের স্বজনরা ক্ষোভ ও হতাশা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আমি দ্রুত এ ঘটনায় চার্জশিট আদালতে দাখিল করে বিচার শুরুর দাবি জানাই।”

গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল হালিম বলেন, সিআইডি দ্রুত তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র জমা দিলে বিচার কাজ শুরু করা হবে।

সিআইডির গোপালগঞ্জ ক্যাম্পের ওসি ফতেহ মো. ইফতেখারুল আলম বলেন, এ মামলা দুটিতে বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।