বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে সোনালি ধানের দোলা। কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। ঘরে ঘরে এখন নতুন ধানের অপেক্ষা। ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষাণ-কিষাণীরা। আর কয়েক দিনের মধ্যে বিস্তীর্ণ মাঠের সোনালি ধান কেটে তুলতে পারবেন তারা।
এরই মধ্যে এল ফণীর আতঙ্ক।
জেলার মনিরামপুর উপজেলার পাঁচাকড়ি এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, গত দুটি মৌসুমে এ অঞ্চলের বোরোখেতে ছত্রাকজনিত ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ধান পাকার আগেই থোড় শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
“তাছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত মৌসুমে ধান আবাদে চরম লোকসান হয়েছে। ফের আবার আমরা যদি ধান নিয়ে দুর্যোগের মধ্যে পড়ি তাহলে আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না। তাই আমাদের এখন বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝড়-বৃষ্টি।”
মাত্র কয়েক দিন সময় পেলেই ধান কেটে বাড়িতে নিরাপদে নিতে পারতেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন ধান কাটার উপযুক্ত মৌসুমে প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের আশঙ্কা আমাদের মহাচিন্তায় ফেলেছে।”
“বাম্পার ফলনের আশা করছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ ধান ঘরে তুলতে পারব কিনা সন্দেহ করছি। ফণীর ভয়াবহতা যদি যশোরের ওপর দিয়ে যায় তাহলে নিশ্চিত আমাদের পথে বসতে হবে। আমরা গত কয়েক বছর ধরে ধান আবাদ করে লোকসান করছি। এবার যদি ঝড়-বৃষ্টি হয় তাহলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।”
যশোরে এ বছর তিন লাখ ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে বলে আঞ্চলিক কৃষি দপ্তর জানিয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, “ইতোমধ্যে জেলার প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটতে পেরেছেন কৃষকরা। তবে এসব ধান এখনও অনেক কৃষক মাঠে বিছিয়ে রেখেছেন।
“বাকি ৫০ শতাংশ ধান নিয়ে যত চিন্তা। ফণীর আগাম বার্তায় ইতোমধ্যে সব উপজেলায় মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে আমরা কৃষককে উপযুক্ত পাকা ধান কাটতে পরামর্শ দিয়েছি। ইতিমধ্যে অনেক কৃষক আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী ধান কেটে নিরাপদে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। বাকি ধান নিয়ে কৃষক চিন্তায় পড়লেও হয়ত শেষ পর্যন্ত দুর্যোগের কবল থেকে তারা রক্ষা পাবেন।”