শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “নুসরাতকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, যার মাস্টারমাইন্ড সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা। এ ঘটনার সঙ্গে তার সহযোগী ও দোসররা জড়িত।
“সিরাজ-উদ-দৌলার শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিলে হয়ত নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা এড়ানো যেত।”
আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতের পরিবার গত ২৭ মার্চ ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেন। ‘মামলা তুলে না নেওয়ায়’ গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত ওই মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় কয়েকজন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত বিভাগের পরিচালক ফয়েজুল কবির সাংবাদিকদের বলেন, “বেশ কয়েকজন ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক, পুলিশসহ অনেকের সাক্ষ্য নিয়েছে আমাদের তদন্ত দল।
“তদন্ত সাপেক্ষে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে ২৭ মার্চের ঘটনার সঙ্গে ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার যোগসূত্র রয়েছে।”
এর আগে ফয়জুল কবিরের নেতৃত্বে তদন্ত দলের ২০ সদস্য সোনাগাজী মাদ্রাসায় যান। পরে তারা নুসরাতে বাড়ি সোনাগাজী উপজেলার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামে যান। সেখানে তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেনী সদর হাসাপাতালে এবং পরে শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া তাকে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় মামলার আসামি সোনাগাজী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাকসুদ আলম, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনীর পিবিআই পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, তাদের মধ্যে কাউন্সিলর মাকসুদ বাদের সবাই রিমান্ডে রয়েছেন। মাকসুদকেও ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিল এর শুনানির দিন ঠিক করেছে আদালত।