জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান জানান, উপজেলার মহান্দি গ্রামে বুধবার গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে।
হঠাৎ একসঙ্গে চারটি ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মিশনের পালক অনাদি মোহন।
তিনি বলেন, “গভীর রাতে সবাই যখন ঘুমে অচেতন তখনই এ ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই টিনশেডের চারটি ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে কমপক্ষে আটটি কমপিউটার, দুটি ল্যাপটপ, কয়েকটি সিলিং ফ্যান, ২৩৩ জন শিশুর জন্য রাখা শিক্ষা উপকরণ, ব্যাগ, শুকনো খাবার ও স্বাস্থ্যসেবার যাবতীয় উপকরণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
“এছাড়া যাবতীয় ডকুমেন্ট আগুনে পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
টিনশেডের এই ঘরের ভেতরে রয়েছে বাঁশের চাচের বেড়া ছিল জানিয়ে অনাদি মোহন বলেন, “এ কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।”
এই মিশনে খ্রিস্টান শিশুদের লেখাপড়া শেখানো, তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া এমনকি মেয়েরা বিবাহযোগ্য হওয়া পর্যন্ত সব দায়িত্ব পালন করা হয়।
অনাদি মোহনের অভিযোগ, “কিছুদিন ধরে তার সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন খ্রিস্টান সদস্যের মতবিরোধ চলছিল। তাই সন্দেহ করছি এটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড হতে পারে।”
‘মহান্দি এজি মিশন’ নামে এই মিশনটি ১২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, “ঘরের দরজা তালাবদ্ধ ছিল। জানালাগুলো ভেতর থেকে ভালভাবে লটকানো ছিল। এজন্য সেখানকার কোনো সম্পদ চেষ্টা করেও বের করা যায়নি।
“সর্বশেষ আমার নিজ ঘরে আগুন লাগার আগেই আমি আমার মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ বের করে আনি।”
মিশনের নৈশপ্রহরী আসগর আলি জানান, রাতে পাহারাকালে তিনি কিছুক্ষণের জন্য তন্দ্রালু হয়ে পড়েন। হঠাৎ আগুন দেখে তিনি চিৎকার দিলে লোকজন ছুটে আসে। পরে আসে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মিশনের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করার আগেই বেশির ভাগ সম্পদ পুড়ে যায়। পরে আগুন পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
“আগুনের কারণ তদন্ত করা হচ্ছে।”
স্থানীয় খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।”
এ ঘটনায় তালা থানায় একটি অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন অনাদি মোহন।