আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভ, সংঘর্ষ

পোশাক খাতের মজুরি কাঠামো নিয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা সপ্তম দিনের মত রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2019, 09:35 AM
Updated : 13 Jan 2019, 10:30 AM

রোববার সকালে ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের এই বিক্ষোভের মধ্যে আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষও হয়েছে।

পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ৮টার দিকে আশুলিয়ার ইউনিক, জামগড়া, বেরন ও নরসিংহপুরসহ এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে নামে।

তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়।

এ সময় শ্রমিকরা পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকলে পুলিশ টিয়ারশেল ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক শানা শামীনুর রহমান জানান।

সংঘর্ষের মধ্যে শ্রমিক ও পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। ভাংচুর এড়াতে আশুলিয়ায় অন্তত ৩০টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।

দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা নির্ধারণ করে গত ২৫ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে তা কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেখানে।

কিন্তু গত ৬ জানুয়ারি ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েকটি কারখানার পোশাক শ্রমিকরা। এরপর প্রতিদিনই তারা রাস্তা আটকে বিক্ষোভের চেষ্টা করছেন। সাভার, আশুলিয়া ও নারায়ণগঞ্জের শ্রমিকরাও রাস্তায় নামছেন। 

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, নতুন মজুরি কাঠামোর কয়েকটি গ্রেডে বেতন কমে গেছে। আবার অনেক কারখানায় নির্ধারিত সময়ে নতুন মজুরি কাঠামো বস্তবায়ন করা হয়নি।

কোনো কারখানা নতুন কাঠামোতে বেতন না দিলে তা শিল্প পুলিশকে জানাতে শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিচালক শামীনুর রহমান।

তিনি বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়াতে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহেদুজ্জামান জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওই এলাকার কয়েকটি গার্মেন্টের শ্রমিকরা কারখানায় হাজিরা দিয়েই বেরিয়ে আসে। তাদের রাস্তায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা দেখে মালিকরা কারখানায় ছুটি দিয়ে দেয়।

কাফরুল থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) কামরুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকাল ৮টার দিকে ছাপড়া মসজিদের কাছে একটি গার্মেন্টের শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানার সামনে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর তারা সেখান থেকে সরে যায়।

শ্রমিক আন্দোলনের কারণে উৎপাদনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে জানিয়ে জামগড়া এলাকার ‘দি রোজ গার্মেন্টর্সের মহাব্যবস্থাপক সাধন কুমার দে বলেন, “এটা উৎপাদনমুখী শিল্প। উৎপাদন ঠিকমতো হলে এ শিল্প লাভজনক প্রতিষ্ঠানে দাঁড়ায়। আর উৎপাদন না হলে এ শিল্প অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে চলে যায়।”

শ্রমিকদের কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি।