যুদ্ধাপরাধের আসামি খোকা ফের বিএনপির প্রার্থী

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৩ (দুপচাঁচিয়া-আদমদীঘি) আসনে আবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন যুদ্ধাপরাধ মামলার পলাতক আসামি আব্দুল মোমিম তালুকদার খোকা।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2018, 04:32 PM
Updated : 28 Nov 2018, 04:32 PM

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বুধবার খোকার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন তার মেয়ে নাছিমা আক্তার লাকি।

এই আসনে খোকার বিকল্প হিসেবে তার স্ত্রী মাসুদা মোমিনও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানান, বিকালে মা ও মেয়ে তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। 

এই আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য খোকা যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন।

খোকার মেয়ে নাছিমা আক্তার লাকি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর বিডিনিউজ টয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবা মিথ্যা মামলায় বিদেশে পলাতক রয়েছেন;  কিন্ত দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। বাবার পক্ষে আমি তার মনোনয়নপত্র দাখিল করলাম।”

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বগুড়া-৩ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক সংসদ সদস্য মোমিন তালুকদার খোকা, তার স্ত্রী মাসুদা মোমিন ও তার ভাই মোহিত তালুকদারকে।

মাসুদা মোমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাই কমান্ডের সিদান্তেই বিকল্প প্রার্থী হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো কারণে মামলার জন্য স্বামীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয় তাহলে আমাকেই নির্বাচন করার গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে।”

মাসুদা আরও বলেন, “আমার শ্বশুর আব্দুল মজিদ তালুকদার সংসদ সদস্য ছিলেন এবং আমার স্বামীও দুইবার সংসদ সদস্য ছিলেন।” 

খোকা বগুড়া-৩ আসন থেকে নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর বন ও পরিবেশ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিও হয়েছিলেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোমিন তালুকদার খোকার বিরুদ্ধে একাত্তরে আদমদীঘিতে হত্যা, গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।

আদমদীঘি উপজেলার কায়েত পাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ সুবেদ আলী ২০১১ সালের মার্চে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা করলে পরে তা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর আদমদীঘি বাজারে পশ্চিমে খারির ব্রিজের উত্তর শ্মশান ঘাটে আব্দুল মোমিন তালুকদার গুলি করে মুক্তিযোদ্ধা মনসুরুল হক তালুকদার টুলু, আব্দুস ছাত্তার, আব্দুল জলিল, আলতাফ হোসেনসহ আরো কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন।

মোমিনের বাবা আব্দুল মজিদ তালুকদার (বর্তমানে মৃত) মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন এবং বাবা-ছেলে দুজনেই সেসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।