ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ‘সাংঘর্ষিক ধারা’ বাতিলের দাবি

বহুল আলোচিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ থেকে কয়েকটি ‘সাংঘর্ষিক ধারা’ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2018, 03:18 PM
Updated : 11 Oct 2018, 03:18 PM

বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র কলাভবনের সামনে বুধবার এক মানববন্ধনে তারা এই দাবি জানান।

বিভাগের সভাপতি আ-আল মামুন বলেন, “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার সঙ্গে ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা সাংঘর্ষিক। এসব ধারা বাক স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার পরিপন্থী। এই আইনে কোনো একসময় বর্তমান সরকারও বিপদে পড়তে পারে। এগুলো বাতিল করা উচিত।

“এই আইনের বিভিন্ন বিষয় অস্পষ্ট ও বিতর্কিত এবং যথাযথ ব্যাখ্যা নেই। এই সময়ে এসে এই আইন আগের অন্য আইনের চেয়ে কেন দরকার পড়ল, সে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি এতে। আর এখানে ‘নিরাপত্তা’ নামক যে শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি।”

ডিজিটাল যোগাযোগের চর্চায় এই আইনের গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ডিজিটাল যোগাযোগের চর্চা শুরু হয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল যুগের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক তৎপরতা থাকলেও পুরাতন যুগের ধারার মতো করে আইন করা হয়েছে। এখানে পাবলিক ও প্রাইভেট স্ফিয়ারের কোনো ব্যাখ্যা নেই। কোনটা আসলে পাবলিক হবে আর কোনটা প্রাইভেট স্ফিয়ার হবে তার ব্যাখ্যা এ আইনে নেই। অর্থাৎ ডিজিটাল পরিসরে কোন জায়গাটা পাবলিক হবে আর কোনটা প্রাইভেট হবে তা পরিষ্কার না।

“এই আইন রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে আইনগুলোকে চর্চা করলে তা রাষ্ট্র ও মানুষের জন্য মঙ্গল হবে না। চিন্তা ও মুক্তচিন্তা চর্চার জন্য ডিজিটাল আইন অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। আবার জামিন অযোগ্য কতকগুলো ধারা রয়েছে। এর মাধ্যমে কাউকে জামিন অযোগ্য ধারায় বিচারের আগেই বিচারের বন্দোবস্ত করা হবে। শাস্তির বন্দোবস্ত করা হবে। মাসের পর মাস, বছরের পর বছরও হতে পারে এ শাস্তি। অর্থাৎ যতদিন ধরে মামলা চলবে, ততদিন জেলেই থাকতে হবে। কোনো ধরনের জামিনের কথাও বলা যাবে না।”

বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুন আব্দুল কাউয়ু, অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, মশিহুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার রানা, মাহাবুর রহমান অনিন্দ্য, সহকারী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বাকীসহ শতাধিক শিক্ষার্থী কর্মসূচিতে অংশ নেন।