পদ্মার ভাঙনে নড়িয়া-সুরেশ্বর সড়কের ১০০ মিটার বিলীন

পদ্মার ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া-সুরেশ্বর সড়কের প্রায় ১০০ মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2018, 06:26 AM
Updated : 20 August 2018, 07:34 AM

শনিবার দুপুরে নড়িয়া উপজেলার বাঁশতলা থেকে মূলফৎগঞ্জ সড়কের এ অংশটি ভেঙে পড়ে; এছাড়া গত তিন দিনে উপজেলার চার কিলোমিটার এলাকার পাঁচ শতাধিক স্থাপনা পদ্মায় বিলিন হয়েছে।

এতে ব্যবসা বাণিজ্যে লোকসানের পাশাপাশি ভিটেমাটি হারিয়ে পদ্মা পারের মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, ভাঙন অব্যাহত থাকলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাদ্য গুদাম ও নড়িয়া সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়বে।

মূলফৎগঞ্জের আব্দুর রহিম সিকদার বলেন, “বাঁশতলা থেকে মুলফৎগঞ্জ সড়কের প্রায় ১০০ মিটার পদ্মায় চলে গেছে; আরও অন্তত ২০/২৫টি স্থানে সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে।”

মুলফৎগঞ্জ বাজারের ব্যাবসায়ী আলামিন মৃধা বলেন, “এক মাস ধরে পদ্মা নদীর ভাঙনে প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে । নতুন করে নড়িয়া-সুরেশ্বর পাকা সড়ক বিলীন হওয়ায় এখন আমাদের বাজারে তেমন ক্রেতা -বিক্রেতা নাই।”

স্থানীয় নজরুল ইসলাম শেখ বলেন, “গত তিন দিনে উপজেলার বাঁশতলা, শুভগ্রাম, মুলফৎগঞ্জ, সাধুর বাজার, ওয়াপদা সহ প্রায় চার কিলোমিটার এলাকার পাঁচ শতাধিক পাকা ঘরবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা, বিভিন্ন স্থাপনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্রিজ-কালভার্ট নদী গভে বিলীন হয়ে গেছে।

“ভাঙনের সময় অনেকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রও সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ ও পাচ্ছেন না। চোখের পলকে তলিয়ে যাচ্ছে শত শত বসত ভিটা।”

এদিকে ভাঙনের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন পদ্মাপারের মানুষ। ভাঙন কবলিতদের সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম বলে স্থানীয়রা জানান।

বাঁশতলা এলাকার আবুল কালাম বলেন,“ কয়েকদিন পর কোরবারি ঈদ, আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় ঈদ করবো কোথায় নামাজ পরবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, নড়িয়া-সুরেশ্বর সড়কের শুক্রবার ফাটল দেখা দিয়েছিল; শনিবার দুপুরে সড়কের ১০০ মিটার অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

এছাড়া নড়িয়া বাজার, নড়িয়া পৌরসভা ,উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্স, নড়িয়া উপজেলা খাদ্য গুদাম, মুলফৎগঞ্জ বাজার, নড়িয়া উপজেলা পরিষদ ভবন, নড়িয়া সরকারি কলেজ ,মুলফৎগঞ্জ মাদ্রাসা কমপ্লেক্স, নড়িয়া বাজারসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ঝুঁকিতে রয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে পাঁচ কোটি টাকার জিওব্যাগ ফেলেও ভাঙন আটকানো সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানান সানজিদা।

শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে কাজ করে ভাঙন কমানো সম্ভব, তবে পুরোপুরি আটকানো যাবে না।