কুমিল্লায় কিশোর ছেলের পিতৃপরিচয় দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার এক নারী তার সন্তানের পিতৃপরিচয় ও নিজের স্ত্রীর অধিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2018, 10:48 AM
Updated : 13 July 2018, 10:48 AM

কুমিল্লা প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এক যুগের বেশি সময় আগে উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের মামুন মিয়া তাকে ধর্ষণ করেন। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ে করেন।

“মামুনের বন্ধু জাকির ভূঁইয়াসহ আরও কয়েকজন সাক্ষী ছিলেন। তারা তিন লাখ টাকা দেনমোহর ঠিক করেন। কিন্তু মামুন আমাকে বাড়ি নেননি। পরে মামুন বিদেশে চলে যান। কখনও কোনো খোঁজখবর নেননি। ২০০৭ সালে মামুন দেশে এসে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ সন্তান তার নয় বলে দাবি করে আমাকে অপবাদ দেন মামুন। যতবারই স্ত্রীর মর্যাদা ও সন্তানের পিতৃপরিচয় দাবিতে তার বাড়ি গিয়েছি ততবারই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি।”

এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গেলেও তারা কিছু করতে পারেননি বলে তিনি জানান।

সম্প্রতি ওই গ্রামের তরুণ পারভেজ, জুয়েল, জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন এই মা ও তার ছেলেকে নিয়ে যান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে। কমিশন থেকে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

ইউএনও মিতু মরিয়ম বলেন, “কমিশনের চিঠিমোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিয়েছি। তদন্তে জেনেছি ওই নারী একসময় মামুন মিয়ার বাড়ি কাজ করতেন। তবে ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া পিতৃপরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়।”

এরপর আদালতে মামলা করেন তিনি।

তিনি বলেন, “গত ১৪ মে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ নং বিশেষ আদালতে মামুন মিয়া, ফুল মিয়া ওরফে টুক্কু, দুলাল মিয়া, কামাল ভূঁইয়াসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেছি। আদালত যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে ওই অভিযোগ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে।”

দুই মাসেও চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ আদালতের আদেশ হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাদী আদালতের আদেশের একটি কপি আমার কাছে এনে দিয়েছেন। কিন্তু আদালতের মাধ্যমে এখনও কপি পাইনি। পেলে আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”

এদিকে মামলার আসামিরা মা ও তার কিশোর ছেলেকে গুম-হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে বাদী অভিযোগ করেছেন।

ওই নারী তার বাবার বাড়িতে থেকে আশপাশে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তার ছেলেও স্থানীয় যাত্রাপুর এ কে উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছেলে তার স্কুলের কাগজে বাবার নাম ‘মামুন মিয়া’ লেখেন বলে জানান ওই নারী।

গুম-খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মামুন মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক। তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক কখনও ছিল না। তার সঙ্গে আমার কখনও বিয়ে হয়নি। কাবিনও দেখাতে পারবে না।”