রাঙামাটিতে তিন ইউপিডিএফ কর্মী খুন

ফের রক্তাক্ত হল পাহাড়; রাঙামাটিতে এবার একসঙ্গে খুন হলেন ইউপিডিএফের তিন কর্মী।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2018, 04:14 AM
Updated : 28 May 2018, 07:44 AM

ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এবং জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-এমএন লারমার) পাঁচ নেতা-কর্মী খুনের এক মাসের মধ্যে সোমবার বাঘাইছড়ি উপজেলায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটল। 

নিহত তিনজন হলেন- সুনীল চাকমা সনজিৎ (৩০), অটল চাকমা (৩০) ও স্মৃতি চাকমা।

উপজেলার বাঘাইহাটের করল্যাছড়ি এলাকায় ভোর ৪টার দিকে তাদের হত্যা করা হয় বলে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) বাঘাইছড়ি উপজেলার সংগঠক জুয়েল চাকমা জানান।

বাঘাইছড়ির সাজেক থানার ওসি নুরুল আনোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভোরে তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা শুনেছেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেছে।

প্রসিত বিকাশ খিসা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ তার দলের তিন কর্মীকে হত্যার জন্য ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও জেএসএসকে (এমএন লারমা) দায়ী করেছেন।

ইউপিডিএফ প্রচার বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেএসএস (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা আমাদের তিন কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এর মুখপাত্র লিটন চাকমা বলেছেন, তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।

গত ৩ মে নানিয়ারচর উপজেলায় নিজ কার্যালয়ে সামনে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেএসএসের (এমএন লারমা) অন্যতম শীর্ষ নেতা শক্তিমান চাকমাকে।

এর একদিন পরেই ৪ মে শক্তিমান চাকমার দাহক্রিয়ায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে সশস্ত্র হামলায় নিহত হন ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) অন্যতম শীর্ষ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা, একই দলের নেতা সুজন চাকমা, সেতুলাল চাকমা ও টনক চাকমা। তাদের বাঙালি গাড়িচালক সজীবও নিহত হন।

প্রসিত বিকাশ খিসা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ থেকে বেরিয়ে গঠিত ইউপিডিএফের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে জেএসএস-এমএন লারমার। এই দলটি আবার জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) নেতৃত্বাধীন জেএসএস ভেঙে গড়ে ওঠে।

পাহাড়িদের এক সময়ের একক দল জেএসএস প্রথম ভেঙেছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পর; চুক্তির বিরোধিতা করে প্রসিত খিসা ইউপিডিএফ গঠন করেন।

তারপর জেএসএস ও ইউপিডিএফ দ্বন্দ্বে ২০১৬ পর্যন্ত সংঘাতে মারা গেছেন প্রায় এক হাজার নেতা-কর্মী। ২০১৬ সালে দুই দলের মধ্যে অলিখিত ও অপ্রকাশ্য এক সমঝোতায় সশস্ত্র সংঘাত থামলে কিছুটা স্বস্তি আসে পাহাড়িদের মনে।

কিন্তু এরই মধ্যে দুই দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধে আরও দুটি দল গঠনের পর সংঘাতে পায় নতুন মাত্রা।