রথীশকে চেতনানাশক বড়ি খাওয়ানো হয়েছিল আগে: চিকিৎসক

রংপুরের আইনজীবী রথীশচন্দ্র ভৌমিক বাবুসোনাকে চেতনানাশক বড়ি খাইয়ে সংজ্ঞাহীন করার পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2018, 02:46 PM
Updated : 5 April 2018, 03:05 PM

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন আকাশ একথা জানান।

বৃহস্পতিবার বিকালে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়।

ডা. কফিল বলেন, “রথীশচন্দ্রকে চেতনানাশক বড়ি খাওয়ানোর পর তিনি অচেতন হয়ে গেলে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। তার গলায় দাগ ছিল। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশেও জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে।”

লাশের শরীর ফুলে পচন ধরতে শুরু করেছিল বলেও জানান তিনি। অর্থাৎ রথীশকে কয়েকদিন আগেই হত্যা করা হয়েছিল।

গত ৩০ মার্চ সকাল থেকে রথীশের সন্ধান মিলছিল না বলে তার স্নিগ্ধা সরকার দীপা জানালে তা নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। সন্দেহ করা হচ্ছিল, জঙ্গি কিংবা জামায়াতে ইসলামীর হাত রয়েছে এতে।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক রথীশ জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও এবং মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন। জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলায়ও সাক্ষ্য দেন তিনি।

পরে মঙ্গলবার রাতে রথীশের বাড়ি থেকে আধা কিলোমাটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকায় দীপার সহকর্মী শিক্ষক কামরুল ইসলামের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়িতে রথীশের বালুচাপা দেওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব বলছে, ‘পরকীয়ার’ জেরে স্ত্রী দীপা পরিকল্পিতভাবে রথীশকে হত্যা করেছে।

রথীশের সহকারী গ্রেপ্তার

রথীশচন্দ্র হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মিলন মহন্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রংপুর কোতোয়ালি থানার এসআই আল আমীন জানিয়েছেন। 

রথীশ নিখোঁজ হওয়ার পর ১ এপ্রিল তার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। লাশ উদ্ধারের পর তা হত্যামামলায় পরিণত হয়েছে।

এসআই আল আমীন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে রথীশ হত্যা মামলায় মিলনকে আসামি দেখিয়ে রংপুরের অতিরিক্ত বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “মিলন ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ায় রথীশচন্দ্রের বাড়িতে সব সময় যাতায়াত করতেন। তার বাড়িতে মাঝে মধ্যে থাকতেনও। রথীশের স্ত্রীর সঙ্গেও তার সদ্ভাব ছিল।

“হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তিনি জানেন এবং ওই দিন তিনি রথীশের বাড়ির বাইরে নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।”

লাশ উদ্ধারের আগের দিন মঙ্গলবার রাতে মিলনকে আটক করে পুলিশ। এ নিয়ে এ হত্যা মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হল।

রথীশের স্ত্রী দীপা ভৌমিক, তার ‘প্রেমিক’ কামরুল ইসলাম ও তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মিলন ছাড়া বাকি চারজনকে কোতোয়ালি থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে এসআই আল আমীন জানান।