‘নির্যাতন করুন অসুবিধা নেই, শুধু শান্তিপূর্ণ ভোট দিন’

বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সরকারের সমালোচনা করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2018, 02:54 PM
Updated : 9 March 2018, 03:31 PM

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে খুলনায় দলীয় কার্যালয়ে শুক্রবার প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।   

শনিবার বিকাল ৩টায় নগরীর কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ করার কথা রয়েছে।

তবে ইতিমধ্যে ওই স্থান ও আশপাশ এলাকায় শনিবার সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে খুলনা মহানগর পুলিশ।

নজরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, নির্যাতন করছে। আপনারা আমাদের নেতাদের গ্রেপ্তার করুন। নির্যাতন করুন কোনো অসুবিধা নেই। শুধু শান্তিপূর্ণ ভোট দিন, দেখবেন ভোট বিপ্লব ঘটে গেছে।”

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, তাদের মিছিল করতে বাধা দেওয়া হয়। জনসভা করতে বাধা দেওয়া হয়। স্লোগান দিতে বাধা দেওয়া হয়। লিফলেট বিলি করতে গেলে গ্রেপ্তার করা হয়।

“এমন পরিস্থিতিতে আমরা আপনাদের উপর নির্ভর করি। এক সময় বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। সেই স্বাধীনতা জিয়াউর রহমান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।”

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ‘সরকারি টাকায় গাড়ি-ঘোড়ায় চড়ে, হেলিকপ্টারে করে’ নৌকার পক্ষে নির্বাচনী জনসভা করার অভিযোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

অপরদিকে তার দলের নেতাকর্মীরা নেত্রীর মুক্তি এবং একটি অংশগ্রহণমূলক ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ একটা সংসদ প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন, বলেন তিনি।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শহীদ হাদিস পার্কে তারা জনসভা করার অনুমতি চেয়েছেন উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম বলেন, “এখন শুনছি আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠন সেখানে সভা ডেকেছে। তারা পায়ে পা দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এখন পুলিশ বলছে, হাদিস পার্ক কেন আশপাশের রাস্তাতেও সমাবেশ করা যাবে না। তারা আসলে ১০ তারিখে সভা করতে দিতে চায় না।”

দলের স্থায়ী কমিটির নির্দেশ অনুযায়ী তারা সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে আসছেন বলে জানান।

কোনো ধরনের উস্কানিতে পা দেবেন না উল্লেখ করে তিনি দলীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় সভা করবেন বলে জানান।

বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ বিএনপিসহ ২০ দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, মহানগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি ও জেলা বিএনপি সভাপতি শফিকুল আলম মনা।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, সেকেন্দার জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, তারিকুল ইসলাম, ফকরুল আলম, শেখ মোশাররফ হোসেন, মাহবুব কায়সার, আজিজুল হাসান দুলু, আসাদুজ্জামান মুরাদ প্রমুখ।

শহীদ হাদিস পার্কে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একই দিনে একই সময়ে নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে সমাবেশ ডাকায় শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সেখানে সব ধরনের সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করেছে মহানগর পুলিশ।

খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির বলেন, একই দিনে একই সময়ে একই স্থানে পরস্পর বিরোধী দুটি রাজনৈতিক দল সমাবেশ আহ্বান করায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

হুমায়ুন কবির বলেন, শনিবার বিকাল ৩টায় শহীদ হাদিস পার্কে সমাবেশ করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়। একই দিন একই সময়ে আওয়ামী লীগ হাদিস পার্কে সমাবেশ করার জন্যও অনুমতি চায়।

“তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শনিবার (১০ মার্চ) সকাল ৬ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত হাদিস পার্ক ও সংলগ্ন এলাকায় সকল প্রকার সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”

খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজারুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, তাদের খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতাসীন দল হাদিস পার্কে সমাবেশ আহ্বান করেছে, যাতে তাদের অনুমতি দেওয়া না হয়।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ওখানে ১০ তারিখে আওয়ামী লীগ সমাবেশ আহ্বান করেছে। বিষয়টি জানিয়ে কেএমপিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে দুই দিন আগে।