রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে শনিবার থেকে সেনা

রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসনে শনিবার সেনাবাহিনী কাজ শুরু করবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2017, 04:44 PM
Updated : 22 Sept 2017, 04:47 PM

শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন এ কথা জানান।

জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সেনাবাহিনী কাজ করবে জানিয়ে আলী হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী তাদের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে।

“শুক্রবার সারাদিন সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টরা রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প এলাকা পরিদর্শন করেছে কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা কাজ শুরু করবেন।”

মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে অন্তত ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে জানিয়ে আলী হোসেন বলেন, হঠাৎ করে সীমান্তের এপাড়ে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার মাঝে ত্রাণ বিতরণ এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের পক্ষে অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এ কারণে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

“সেনাবাহিনী প্রশাসনের এ আহবানে আগ্রহ দেখিয়েছে। বুধবারই ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে সহায়তা এবং অংশগ্রহণের জন্য সেনাবাহিনীকে অনুরোধ জানায় প্রশাসন।

“প্রশাসনের সঙ্গে সার্বিকভাবে সমন্বয় করে সেনাবাহিনী শনিবার থেকে কার্যক্রম শুরু করবে।”

ত্রাণ বিতরণ ও পুনর্বাসনে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার আলোকে করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

তিনি আরও বলেন, “সার্বিকভাবে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, খাদ্য, আবাসসহ সবধরনের মানবিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। বিশাল এ কর্মযজ্ঞ প্রশাসনের একার পক্ষে সম্ভব নয়।”

নিরাপত্তার বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, পুলিশসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ কে এম ইকবাল হোসেন বলেন, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সজাগ রয়েছে। সীমান্ত এলাকাসহ শরণার্থী ক্যাম্পের আশপাশে টহল জোরদার করা হয় এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আরাকান রোহিঙ্গা সলেভ্যাশন আর্মি ( আরসা ) বা অন্য কোনো সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সদস্যরা প্রবেশ করেনি এবং অস্তিত্বও নেই। দেশের মাটি কোনো ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।”

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ( আরআরসি ) মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংস্থার সহযোগিতায় ইতিমধ্যে ২৬ হাজার অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করেছেন। সরকারিভাবে ১৪ হাজার শেড ( ঘর ) নির্মাণে কাজ শুরু হয়েছে।

এর বাইরে তুর্কি রেড ক্রিসেন্টের সহায়তার অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে চার হাজার শেড নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, যা এখনও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন বলে জানান আবুল কালাম।

প্রেস ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনোয়ারুল নাছের ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আব্দুর রহমানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।