রূপা হত্যা: দ্রুত বিচার চেয়ে আইনমন্ত্রীকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ফোন

সিরাজগঞ্জের জাকিয়া সুলতানা রূপাকে টাঙ্গাইলে ‘চলন্ত বাসে ধর্ষণের’ পর হত্যার মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2017, 01:44 PM
Updated : 1 Sept 2017, 01:44 PM

এছাড়া রূপার ছোট বোন মাশরুফা আক্তার পপিকে সরকারি ওষুধ কোম্পানি এসেনশিয়াল ড্রাগসে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আসানবাড়ি গ্রামে শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে রূপা স্মরণ সভায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এ আশ্বাস দেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “রূপাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় যারা জড়িত পুলিশ ইতোমধ্যেই তাদের গ্রেপ্তার করেছে। তারা নিজেদের দোষ স্বীকার আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। আসামিরা যাতে দ্রুত শাস্তি পায়, সে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।”

মন্ত্রী নাসিম স্মরণ সভা থেকেই আইনমন্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে হস্তান্তরের আশ্বাস দিয়েছেন বলে স্মরণ সভায় জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম।

নিহত রূপার মা, ভাই ও বোনসহ পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী রূপার ছোট বোনকে চাকরি দিতে চেয়ে তার জীবনবৃত্তান্ত গ্রহণ করেন। আর তার পরিবারকে দেন এক লাখ টাকা।

একই সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন ৫০ হাজার, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত ২৫ হাজার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল হক ১০ হাজার টাকা দেন। এর আগে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ দিয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা।

রূপাদের বাড়ির চারদিকে বন্যার পানি থাকায় পাশের বাড়িতে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মন্ত্রী। আর পাশের একটি ফাঁকা স্থানে পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত স্বরণ সভায় অংশ নেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “এর আগে শাহজাদপুরে সাংবাদিক আবদুল হাকিম খুনের ঘটনায় তার স্ত্রীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। রূপার বোনকেও চাকরি দেওয়া হবে। আপনারা মনে রাখবেন, বর্তমান সরকার সকল বিপদ-আপদে মানুষের পাশে আছে এবং আগামীতেও থাকবে।”

ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে করে গত ২৫ অগাস্ট রাতে সিরাজগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে বাসের কর্মচারীরা রূপাকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করে রাস্তার পাশে লাশ ফেলে যায়।

টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের পাশে মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় তার লাশ পাওয়ার পর হত্যার আলামত থাকায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে মধুপুর পুলিশ।

পরিচয় জানতে না পারায় ময়নাতদন্ত শেষে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে তাকে দাফন করা হয়।

গণমাধ্যমে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে মধুপুর থানায় গিয়ে ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করে তার পরিবার। পরে রূপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান ছোঁয়া পরিবহনের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।

এ ঘটনায় ওই বাসের চালক, সুপারভাইজার, সহকারীসহ পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তারা সবাই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

খুন হওয়ার ছয় দিন পর কবর থেকে রূপার লাশ তুলে সিরাজগঞ্জে পুনরায় দাফন করা হয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়।

রূপা ঢাকার আইডিয়াল ল কলেজে পড়ালেখার পাশাপাশি একটি কোম্পানির প্রোমশনাল ডিভিশনে কাজ করছিলেন তিনি। তার কর্মস্থল ছিল ময়মনসিংহ জেলা সদরে।