রাজশাহীতে ক্লিনিকে ধর্মঘটে ভোগান্তিতে রোগীরা

গ্রেপ্তার দুই ক্লিনিক ম্যানেজারের মুক্তিসহ তিন দফা দাবি আদায়ের জন্য রাজশাহীর বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে; এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।

বদরুল হাসান লিটন রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2017, 08:41 AM
Updated : 25 Jan 2017, 08:59 AM

ক্লিনিকে মেয়াদ-উত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের পর রোগীদের জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ করেছে বিভিন্ন সংগঠন।

মঙ্গলবার রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কয়েকটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানাসহ দুই ব্যস্থাপককে গ্রেপ্তার করলে তাদের সংগঠন এই ধর্মঘটের ডাক দেয়।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমানা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে প্রায় দেড় বছর আগে মেয়াদ শেষ হওয়া ওষুধ পাওয়া গেছে।

“একটি সার্জিক্যাল ওষুধ তৈরির সময় লেখা রয়েছে ২০ জুলাই ২০১০। আর তার মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৯ জুলাই ২০১৫। এছাড়া নোংড়া, অস্বাস্থ্যকর অপারেশন থিয়েটার ও পরীক্ষার প্রতিবেদনে চিকিৎসক নন এমন লোকের সই করার প্রমাণ পেয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।”

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত আমানা হাসাপাতালকে সাড়ে তিন লাখ, রয়্যাল হাসপাতালকে পৌনে চার লাখ ও ডেলটা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে বলে জানান ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার।

একই ঘটনায় আমানা ও রয়্যাল হাসপাতালের ম্যানেজারদ্বয়কে গ্রেপ্তার করা হয় বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান বলছেন, গ্রেপ্তার দুই ক্লিনিক ম্যানেজারের মুক্তিসহ তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

“একটি ক্লিনিকে প্রচুর পরিমাণ ওষুধ থাকে। তার মধ্যে দুটি অজান্তেই মেয়াদ-উত্তীর্ণ হয়ে যেতে পারে।”

তাদের অন্য দুটি দাবি হচ্ছে - জরিমানার সর্বোচ্চ সীমা পাঁচ হাজার টাকার নিচে রাখা এবং বর্ধিত হোল্ডিং ফি ও সাইনবোর্ড ফি প্রত্যাহার।

মোখলেছুর রহমান বলেন, “১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করতে হবে। তিন থেকে চার লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতা রাজশাহীর কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নেই।”

এদিকে ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে সরজমিনে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে রোগী ও স্বজনদের।

বাগমারা উপজেলার দরগামাড়িয়া গ্রাম থেকে আলতাব হোসেন এসেছন তার স্ত্রীকে নিয়ে।

আলতাব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিন দিন আগে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক দেখিয়ে নগরীর মাইক্রোপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করতে দিয়েছিলাম।

“প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূর থেকে এসে দেখি সেন্টার বন্ধ। এখন আবার ফিরে যেতে হচ্ছে।”

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান এই ধর্মঘটের প্রতিবাদ করেছেন।

তিনি বলেন, “রোগীদের জিম্মি করে দাবি আদায় করা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা উচিত।”