আদালত পুলিশের পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাংসদ আমানুর এদিন একাই আদালতে উপস্থিত হন। তার তিন ভাই বা পলাতক অন্য আসমিরা কেউ আত্মসমর্পণ করেননি।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা গ্রেপ্তার এড়াতে গতবছর হাই কোর্টে গিয়ে বিফল হন। তখনই তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিল।
এরপর পাঁচ মাস আগে জজ আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও এতোদিন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
খুনের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই সংসদ সদস্য গত জুনে সংসদে হাজিরা দিয়ে গেলেও দায়িত্বশীল কেউ তাকে দেখার কথা স্বীকার করেননি।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুককে। হত্যার তিন দিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।
ফারুক হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার খান পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আনিসুল ইসলাম রাজা এবং মোহাম্মদ আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রানাদের চার ভাইকে জড়িয়ে বক্তব্য দেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
এরপর চলতি বছর ৩ ফেব্রুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
বাকি আসামিদের মধ্যে আনিছুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও সমীর মিয়া কারাগারে এবং ফরিদ আহমেদ জামিনে আছেন।
পলাতক ১০ আসামি হলেন- রানার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, দারোয়ান বাবু ওরফে দাঁত ভাঙ্গা বাবু, যুবলীগের তৎকালীন নেতা আলমগীর হোসেন চাঁন, নাসির উদ্দিন নূর, ছানোয়ার হোসেন ও সাবেক কমিশনার মাসুদুর রহমান।
গত ৬ এপ্রিল টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আমিনুল ইসলাম অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এরপর আদালতের নির্দেশে ২০ মে রানাসহ পলাতক আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ করে পুলিশ।
কাঁকন ও বাপ্পা ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। মুক্তি দেশে থাকলেও তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
মামলার দ্রুত নিস্পত্তির জন্য টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার গত ৮ অগাস্ট জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠানোর অনুরোধ করেন। পরদিন জেলা প্রশাসকের অনুমোদন পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়।