আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইলের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার ভাই টাঙ্গাইলের পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 14 Jul 2015, 01:13 PM
আগাম জামিন চেয়ে তাদের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর অবকাশকালীন হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
আদালত এই সময়ে তাদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার না করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যর্টনি জেনারেল মো. বশিরউল্লাহ।
ওই মামলায় ‘গ্রেপ্তার ও হয়রানির’ আশঙ্কা থেকে রানা ও মুক্তি গত ৯ জুলাই হাই কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন। দুই দিন শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার আদালত আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনকারী পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল বশির উল্লাহ।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে শহরের কলেজ পাড়ার বাসার সামনে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
হত্যার তিনদিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে নাহার কারো নাম উল্লেখ না করলেও পরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের খান পরিবারের চার ভাই এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
সাংসদ আমানুরের তিন ভাইয়ের মধ্যে সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক; জাহিদুর রহমান খান কাঁকন টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবং সানিয়াত খান বাপ্পা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা।
খান পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আনিসুল ইসলাম (রাজা) এবং মোহাম্মদ আলীকে পুলিশ এ মামলায় গ্রেপ্তার করার পর তারা গত বছর অগাস্টে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা ওই হত্যাকাণ্ডে চার ভাইকে জড়িয়ে বক্তব্য দেন বলে ডেপুটি অ্যর্টনি জেনারেল বশির উল্লাহ জানান।
পরে ওই জবানবন্দি প্রত্যাহার করার জন্য দুইজন চলতি বছরের জানুয়ারিতে আবেদন করেন, যা শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।
আমানুর রহমানসহ অন্যরা এ মামলায় গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নির্দেশনা চেয়ে গত বছর সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত ‘যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া’ তাদের গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ ও রুল দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরুদ্ধে আবেদন করলে আপিল আদালত গত ১০ ডিসেম্বর হাই কোর্ট রুল নিষ্পত্তি করতে বলে। কিন্তু আবেদনকারীপক্ষ তা না চালানোর কথা জানালে তা ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ হয়।