সাতক্ষীরায় স্লুইস গেটে ভাঙন, লোকালয়ে পানি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় একটি স্লুই গেট আংশিক ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।

শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2016, 03:17 PM
Updated : 6 July 2016, 03:17 PM

মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে সুন্দরবন সংলগ্ন হরিণগর বাজারের ফুলমালঞ্চ নদীর উপর এ স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছে গত শতকের ষাটের দশকে। বুধবার এর একটি পাটাতন ভেঙে গেছে।  

মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল বলেন, এ পর্যন্ত অন্তত দেড়শ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত স্লুইস গেটটি সংস্কার করা না হলে সম্পূর্ণ ভেঙে যাবে এবং পুরো শ্যামনগর উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  

ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক একবার ও শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিনবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।

“বুধবার সারাদিন যেভাবে প্রবল বেগে পানি ঢুকেছে তাতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা শুধু সময়ের ব্যাপার।”

এলাকার মানুষকে নিয়ে তিনি একটি কাঠের বাঁধ তৈরি করেছেন জানিয়ে বলেন, তাতে আদৌ কোনো লাভ হবে কি না জানা নেই।

হরিনগর এলাকার দেবদাস মন্ডল বলেন, গেটের ভাঙনটি দেড় মাসাধিক আগের। বিষয়টি এলাকার মানুষ বারবার প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদকে জানিয়েছে।

“এখনকার ভঅঙনে পানির প্রবল তোড়ে দেড়শ’র বেশি পরিবারের সম্পদ নদীতে ভেসে গেছে।”

হরিনগর বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী অসিত কুমার মল্লিক বলেন, স্লুইস গেটটির উপর দিয়ে প্রতিদিন ট্রাক, ভ্যান, সাইকেল, পিকআপসহ নানা যানবাহন ও শতশত মানুষ যাতায়াত করে।

“গেটটির পূর্বপাড়ের রেলিংটিও ভেঙে পড়েছে। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ড একেবারেই নির্বাকার ও নির্লিপ্ত।”

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মো. মঞ্জুর আলম বলেন, “পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) না পারলে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে ছেড়ে দিক। কিন্তু এভাবে ঝুঁকির মধ্যে এলাকার মানুষকে রাখা কখনও উচিত নয়।”

তিনি নিজেও বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করেছেন; তারপরও তারা নির্লিপ্ত, বলেন ইউএনও।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসে গিয়ে সাতক্ষীকার এসও আবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শ্যামনগরের এসও নিখিল বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, ঈদের পরপরই গেটটির সংস্কার করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার ভৌমিককে বারবার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।  

স্থানীয় বিকাশ মন্ডল, কনিকা রাণী মন্ডল, কানাইলাল মন্ডলসহ ভুক্তভোগী অনেকেই বলেন, সাগরের পানির চাপে ফুলমালঞ্চ নদীর পানি যেভাবে ঢুকছে তাতে যেকোনো মুহূর্তে গোটা শ্যামনগর উপজেলা প্লাবিত হতে পারে।