ভারত থেকে বানের পানিতে ভেসে আসা বুনো হাতিটি কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও সাত দিনেও তাকে উদ্ধার করা যায়নি।
Published : 03 Jul 2016, 11:45 AM
রৌমারী সীমান্ত দিয়ে আসা হাতিটি ইতিমধ্যে কয়েক দফা অবস্থান পরিবর্তনের পর সর্বশেষ সন্ন্যাসীকান্দা চরে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং হাতিটিকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের কথা বলা হলেও উদ্ধারের বিষয়ে দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকালে নয়ারচর থেকে সরে এসে রোববার সকালে সন্ন্যাসীকান্দা চরে অবস্থান করছে হাতিটি।
“গত সোমবার রাতে হাতিটি ব্রহ্মপুত্র নদের বাগুয়ার চরের কাদায় আটকা পড়ে। সেখানে দুইদিন আটকে থাকার পর নিজের চেষ্টায় মুক্ত হয়ে নয়ারচর কাশবনে যায়।”
মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের সদস্য ও নয়ারচরের বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, শনিবার প্রায় সারাদিন বন্যার পানিতে কাটায় হাতিটি। রাতে জামালপুর জেলার সারন্দাবাড়ীতে ব্রহ্মপুত্র নদের চরে গিয়ে অবস্থান নেয়।
“হাতিটি চরের কাশ খেয়ে বেঁচে আছে। দুর্বল হয়ে পড়লেও তার চলাচল স্বাভাবিক। আমরা চরের মানুষ নৌকা দিয়ে পাহারা দিচ্ছি।”
হাতিটি বাংলাদেশে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিকূল পরিবেশে হাতির পথচলা দেখার জন্য মানুষ ভিড় করছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে হাতিটিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে গত ছয় দিন ধরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বন বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা।
ঢাকা সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলছেন, “আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। তাদের প্রতিনিধি দল এলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বন বিভাগের পর্যবেক্ষক দল হাতিটিকে পর্যবেক্ষণ করে গেছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক অসিত চন্দন পাল শনিবার বলেছিলেন, হাতিটির যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য একটি দল তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
“এছাড়া হাতিটি যাতে বিপজ্জনক জায়গার দিকে না যায় সেজন্য চরের মানুষকে দিয়ে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ হাতিটি উদ্ধারের জন্য শিগগিরই বাংলাদেশে আসবে বলে তিনি জানান।
গত সোমবার এই বুনো হাতিটি রৌমারী উপজেলার আন্তর্জাতিক মেইন পিলার নম্বর ১০৫২-এর কাছ দিয়ে বানের পানিতে ভেসে বাংলাদেশে আসে। ভারতের আসাম রাজ্যের শিশুমারা পাহাড়ি এলাকা থেকে এই হাতিটি চলে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।