ফরিদপুরের এক নম্বর আমলি আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন অভিযোগপত্র দেন।
ফরিদপুরের কোর্ট পরিদর্শক সুবীর রায় মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“অতিরিক্ত বিচারিক হাকিম মো. মাসুদ আলী তাৎক্ষণিকভাবে মামলাটি ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”
ইন্টারনেটের মাধ্যমে অপরাধের বিচারে বাংলাদেশে একটি সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালই কাজ করছে।
সুবীর রায় বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে আসামি করে গত ১৬ মার্চ অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন। আজ তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।”
আইনের এই ধারায় উল্লেখ আছে, কেউ ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে কোনো কিছু প্রকাশের মাধ্যমে কারও মানহানি ঘটলে বা ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলে তার সাজা হবে সর্বনিম্ন ৭ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড।
তথ্য প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত এই ধারায় অভিযোগপত্রের প্রতিক্রিয়ায় প্রবীর সিকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি আইনগতভাবেই এ মামলা মোকাবেলা করব।”
ফেইসবুকে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে হুমকি পাওয়ার পর নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে ঢাকায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর নিজের এলাকার সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীল বেয়াই খন্দকারে মোশাররফের বিরুদ্ধে লিখেছিলেন একাত্তরে শহীদের সন্তান প্রবীর সিকদার।
নিজের জীবন নিয়ে ঝুঁকির কথা জানিয়ে তার মৃত্যু ঘটলে তিনজনকে আগাম দায়ী করে লেখেন তিনি, তার মধ্যে একজন ছিলেন মোশাররফ।
ওই লেখার মাধ্যমে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের অভিযোগ তুলে ২০১৫ সালের ১৬ অগাস্ট প্রবীর সিকদারকে আসামি করে ফরিদপুরে মামলাটি করেন জেলা জজ কোর্টের এপিপি ও জেলা পূজা উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা স্বপন পাল।
এরপর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে প্রবীর সিকদারকে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রবীর সিকদার উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ এবং দৈনিক বাংলা ৭১ নামের পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি এর আগে সমকাল ও কালের কণ্ঠে কাজ করেছিলেন।
তারও আগে দৈনিক জনকণ্ঠে ছিলেন প্রবীর। ২০০১ সালে দৈনিকটির ফরিদপুর প্রতিনিধি থাকাকালে সন্ত্রাসীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু জীবন যাপন করছেন তিনি।