মেলা জমেছে সোনারগাঁয়

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে চলছে মাসব্যাপী লোকজ উৎসব ও কারুশিল্প মেলা।

মজিবুল হক পলাশ, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2016, 04:58 AM
Updated : 15 Jan 2016, 06:04 AM

মেলায় জারি-সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, মারফতি, লালনগীতিসহ বিভিন্ন অঞ্চলের লোকসংগীত, লোককবিতা ও ছড়াপাঠের আয়োজন রয়েছে।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, পসরা সাজিয়ে বসেছে রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, রংপুরের শতরঞ্জি, সোলা শিল্প, সোনারগাঁয়ের নকশিকাঁথা, বাঁশ-বেত শিল্পসহ বিভিন্ন খাতের ১৭২টি স্টল।

প্রায় হারিয়ে যাওয়া কনে দেখার আচার, গায়ে হলুদ, জামাইকে পিঠা খাওয়ানো, কানামাছি, গোল্লাছুট, বৌচিসহ বিভিন্ন খেলাধুলা, গ্রাম্য সালিশ প্রভৃতি লোকজীবন প্রভৃতি মেলায় প্রদর্শন করা হচ্ছে।

শখের হাঁড়ি তৈরির কারিগর সুশান্ত কুমার পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রাজশাহী অঞ্চলে আগে প্রায় সাড়ে চার হাজার কারিগর ছিল। এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। তিনি ছাড়া এখন এ পেশায় আর কেউ নেই বলে তার ধারণা।

এ পেশায় থেকে রুটি-রুজি হচ্ছে না বলে সবাই অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

রাঙ্গামাটির হাতে পোশাক তৈরির কারিগর শিউলি বেগম বলেন, “আমাদের এলাকার ঐতিহ্য মানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্যই মেলায় এসেছি।”

মেলায় বেচাকেনা ভালো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মেলায় আসা দর্শনার্থী শেফালি বেগম, রফিকুল ইসলাম, তালুকদার খালেকসহ বেশ কজন জানান, দেশের অন্যান্য মেলার চেয়ে সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প মেলা ব্যতিক্রম। এ মেলায় দেশের বিলুপ্ত পণ্য একসাথে একই জায়গায় পাওয়া যায়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য  সিমিন হোসেন রিমি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বর্তমান প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই মেলার আয়োজন।

লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য আর লোক ও কারুশিল্পের বিকাশ ঘটাতেই বঙ্গবন্ধু সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন।

“দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা চারু ও কারু শিল্পীদের তৈরি পণ্য মেলার মাধ্যমে প্রদর্শন ও বিক্রির সুযোগ রয়েছে।”

মেলায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ হাজার লোকের আগমন ঘটবে বলে তিনি ধারণা করছেন। 

মেলা চলবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।