মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে তাদের হস্তান্তর করা হয় বলে জানান বিজিবি কক্সবাজার ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রবিউল ইসলাম।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ জানান, মিয়ানমার থেকে ১২৫ জনকে ঘুমধুম সীমান্তের ‘বাংলাদেশ মিয়ানমার মৈত্রী সেতু’ দিয়ে ফেরত আনার পর চারটি বাসযোগে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আনা হয়।
“সেখানে তাদের ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ করে তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপরই তাদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।”
তিনি জানান, ফেরত আনাদের মধ্যে ২৭ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক রয়েছে। তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে বুধবার আদালতে হাজির করা হবে। আদালত ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিলে তাদের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজার ইউনিটের সহায়তায় নিজ নিজ বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সীমান্তের জিরো পয়েন্টের বিপরীতে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়ায় ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে বিজিবির পতাকা বৈঠকে অংশ নিতে ১৮ সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার যান।
কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটন্যোন্ট কর্নেল মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলে বিজিবি সদস্য ছাড়াও জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ন্যাশনাল প্রোগাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, ফেরত আনা ১২৫ জনকে আইওএমর পক্ষ থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত খাদ্য, চিকিৎসা ও যাতায়ত খরচসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে।
আইওএম কর্মকর্তা আসিফ জানান, ফেরত আনা ১২৫ জনের বাড়ি ১৪টি জেলায়। এদের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজারে ৮৫ জন, বান্দরবানের ৫ জন, ফেনীর ৩ জন, ভোলার ২ জন, চাঁদপুরের ১ জন, মাদারীপুরের ৭ জন, গোপালগঞ্জের ১ জন, রাজবাড়ীর ২ জন, ব্রাম্মণবাড়ীয়ার ৫ জন , গাজীপুরের ১ জন, টাঙ্গাইলের ৪ জন, ঢাকার ২ জন, কিশোরগঞ্জের ৩ জন ও মেহেরপুরের ৪জন।
এছাড়া এদের মধ্যে শিশু-কিশোর রয়েছে ২৭ জন, যাদের মধ্যে কক্সবাজারের ২৪ জন, বান্দরবানের ১ জন, মাদারীপুরের ১ জন ও ঢাকার ১ জন রয়েছে।
গত ২১ মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ২০৮ জন এবং ২৯ মে আরো ৭২৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশীদের উদ্ধার করে দেশটির নৌ-বাহিনী। বাংলাদেশি হিসেবে সনাক্তদের ৮ জুন, ১৯ জুন, ২২ জুলাই ও ১০ অগাস্ট চার দফায় দেশে ফেরত আনা হয় ৫০১ জনকে। পঞ্চম দফায় আনা ১২৫ জনসহ এ পর্যন্ত দেশে ফেরত আনা হয়েছে ৬২৬ জনকে।