চাঁদা না দিলে সমন্বয়করা আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে বলে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়া হয়, বলেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র।
Published : 06 Oct 2024, 01:57 PM
কক্সবাজার সদরে ‘সমন্বয়কের সহযোগী’ পরিচয়ে বনবিভাগের কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান, জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন।
গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ (২২) একই এলাকার মোহাম্মদ হাছনের ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, শরীফ কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারের সমন্বয়ক দাবিদার মনির খানের সহযোগী এবং মামলার প্রধান আসামি।
মামলার অপর আসামি মনির খান (২৩) কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের তেতৈয়া এলাকার মো. গুরাপুতুর ছেলে।
মামলার নথির বরাতে জসিম উদ্দিন বলেন, “মোহাম্মদ শরীফ শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ অফিসে গিয়ে স্থানীয় বন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বাবুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার কথা বলেন।
এসব অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়করা কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলেও জানান তিনি।
“আলাপের এক পর্যায়ে তিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী বলে দাবি করেন। মনিরের নির্দেশে তিনি আলাপ করতে গেছে বলেও তথ্য দেন।”
পরে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন শরীফ। চাঁদা না দিলে সমন্বয়করা আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে বলে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে হুমকিও দেওয়া হয়, বলেন জেলা পুলিশের এ মুখপাত্র।
জসিম বলেন, এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বাবুল বাদী হয়ে দুই জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মোহাম্মদ শরীফকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার বাদী ফারুক আহমেদ বাবুল বলেন, গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ নিজেকে স্থানীয় সমন্বয়ক মনির খানের সহযোগী দাবি করে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিন লাখ টাকা চাঁদা চান। এ নিয়ে আলাপের সময় তিনি কৌশলে দু’জনের কথোপকথনের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করেন।
তিনি বলেন, “পরে আমি বিষয়টি বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করি। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমি মামলা দায়ের করেছি।“
এ ব্যাপারে জানতে মনির খানের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজারে সমন্বয়ক নামের কোনো পদ ও কমিটি নেই বলেন তথ্য দিয়েছেন আন্দোলনকারীদের স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ।
তিনি বলেন, “গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফ ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ নয়। তবে আন্দোলনের সব পর্যায়ে মনির খানের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ থাকলেও এই ঘটনার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত কিনা তা অবগত নই। ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধিরাও খোঁজ খবর নিচ্ছেন।“
চাঁদা দাবির ঘটনার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের কোনো ধরণের সংশ্লেষ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ঘটনার সঙ্গে মনির খানের সম্পৃক্ততা থাকলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এর দায় ছাত্র প্রতিনিধিরা নেবেন না। “
এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে দেশের প্রচলিত আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান, স্থানীয় ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ।