জাতীয় পার্টির দুইনেতা ও দুই কাউন্সিলর গ্রেপ্তার হওয়া প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ব্যক্তিদের দায় জাতীয় পার্টি এবং সিটি করপোরেশন নিবে না।
Published : 28 Jul 2024, 11:15 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে দুষ্কৃতিকারীদের সহিংস তাণ্ডবে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রায় তিন কোটি বিশ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
রোববার দুপুরে কোটা আন্দোলনের সময় সহিংসতায় রংপুর সিটি করপোরেশনের ক্ষতির পরিমাণ ও সমসাময়িক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিতকণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
এসময় এ আন্দোলন ঘিরে সংঘাত ও প্রাণহানির ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি কোনো নিরাপরাধ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য আইন প্রযোগকারী সকল সংস্থাকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সহিংসতার ঘটনায় জাতীয় পার্টির দুইজন নেতা ও সিটি করপোরেশনের দুইজন কাউন্সিলর গ্রেপ্তার হওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে দলটির কো-চেয়ারম্যান মোস্তফা বলেন, সহিংসতার ঘটনায় জাতীয় পার্টির নেতা ও কাউন্সিলর জড়িত থাকলে, সেই ব্যক্তিদের দায় জাতীয় পার্টি এবং সিটি করপোরেশন নিবে না।
তিনি বলেন, সহিংসতার ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। এই বিষয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যা ৭টা রাত ১২টা পর্যন্ত দুষ্কৃতকারীরা রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত মূল্যবান সম্পদের ধ্বংসসাধন করে।
দুষ্কৃতকারীরা লোহার রড, এসএস পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র ও ইট পাটকেল দিয়ে ভাঙচুর আরম্ভ করলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দুষ্কৃতকারীদের মারমুখী আচরণে নিরাপত্তাকর্মীরা পিছু হটেন।
ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এতে রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে স্থাপিত ৬৪টি সিসি ক্যামেরা, নগরজুড়ে আনুমানিক ৩০ কিলোমিটার ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল, তিনটি এলইডি টিভি, নগর ভবনের প্রধান প্রবেশ ফটকে স্থাপিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ দুপাশে স্থাপিত চারটি সিসি ক্যামেরা, নিরাপত্তা প্রহরীর কক্ষ ও প্রশাসনিক ভবনের জানালার থাই গ্লাস, প্রধান ফটকের দুইপাশে অবস্থিত গার্ডেন লাইটসমূহ, ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের ক্ষতি হয়।
এছাড়াও সিটি করপোরেশনের ভবন থেকে লালবাগ রেল ক্রসিং পর্যন্ত রাস্তার মাঝখানে, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ফুট ওভার ব্রিজের নিচের দুই পাশে অবস্থিত ডিভাইডার প্রটেকশন গ্রিল এবং শাপলা চত্ত্বরের গোল চত্তরের গ্রিলসমূহ, জাহাজ কোম্পানির মোড় ও লালকুঠি মোড়ে স্থাপিত ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের দুইটি এলইডি সাইনসহ বিভিন্ন সম্পদের ক্ষতিসাধন করেছে দুর্বৃত্তরা।
এতে ক্ষয়ক্ষতির আনুমানিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। এসব ঘটনায় মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় একটি মামলা হয়েছে বলেও জানান মেয়র।
সংবাদ সম্মেলন থেকে সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে রসিক মেয়র বলেন, গত দুই সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনাসহ জানমালের যে ক্ষতি সাধন হয়েছে তা অপূরণীয়। তবে প্রতিবাদী শিক্ষার্থী এবং সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে এসব সহিংস ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।
এ সময় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা, সচিব জয়শ্রী রানী রায়, নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আনিচুজ্জামান, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, সাবেক প্যানেল মেয়র ও বর্তমান কাউন্সিলর সামছুল আলম, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু হাসান চঞ্চল, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর হাসনা বানু, ফেরদৌসি রহমান উপস্থিত ছিলেন।