চিকিৎসার অবহেলার বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলে হাসপাতলের তত্ত্বাবধায়ক জানান।
Published : 03 Nov 2024, 09:00 PM
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর জেরে নার্স ও ওয়ার্ড বয়কে মারধরের অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনার সৃষ্টি হলে হাসপালটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
রোববার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল থেকে দাবি করা হচ্ছে, রোগীর স্বজনদের হাতে লাঞ্ছিত ও মারধরে আহত হয়েছেন তাদের স্টাফ নার্স আঞ্জুম আরা, শান্তা আক্তার, রওশন আরা, ওয়ার্ড বয় ইমাম ও নিরাপত্তা প্রহরী জসিম।
ডেঙ্গু আক্রান্ত মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌর এলাকার হাজেরা খাতুন (৪০) নামে এক রোগী শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে পঞ্চম তলায় ভর্তি হন।
হাসপাতালটির চিকিৎসক হিমেল বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় ভর্তি হলেও তিন দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হন হাজেরা। তার ডেঙ্গু সনাক্ত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে আনা হয়। তার ডায়াবেটিসসহ শরীরের অন্য রোগও ছিল।
রোববার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে হাজেরা খাতুনের মৃত্যু হয়।
এ মৃত্যুর জন্য বিক্ষুব্ধ স্বজনরা চিকিৎসার অবহেলা ও নার্সদের গাফিলতিকে দায়ী করেন। যদিও নার্সরা তা অস্বীকার করছেন। এ নিয়ে হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, পাঁচ তলার নার্সদের ডেস্কের সামনে জটলা। রোগীর স্বজনরা তেরে গিয়ে ডেস্কের ওপারে থাকা বয়দের মারধর করছেন। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়।পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল বলেন, রোগীর স্বজনদের অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতালটির জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি) মাহমুদুল হককে প্রধান করে গঠন করা এই কমিটিকে আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
নার্স ও ওয়ার্ড বয়দের মারধরের ঘটনায় হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আওয়াতিফ ইবনে মতিন বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে, মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে।এ বছর এখন পর্যন্ত ৪৭৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।
অক্টোবর মাসেই মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৪২ রোগী। এখনো হাসপাতালটিতে ৩৫ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে।
নার্স সঙ্কটও প্রকট, তাই প্রয়োজনীয় নার্স পদায়নের জন্য জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জরুরি বার্তা দিয়েছেন বলে জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।