রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, সোমবার রাত থেকে ১২ ঘণ্টায় জেলায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
Published : 18 Jun 2024, 07:56 PM
উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের ১৫টি নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর জের ধরে আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জেলায় স্বল্প মেয়াদের বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো।
এর মধ্যে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর পানি বেড়ে নদ-নদী তীরবর্তী চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটছে তীরবর্তী মানুষের।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গত কয়েকদিন থেকে কুড়িগ্রামে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের উজানে ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে যা বিভিন্ন নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে।
এর মধ্যে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফুলবাড়ি উপজেলায় তালুক শিমুলবাড়ী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় ধরলা সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার এবং ধরলা সেতু পয়েন্টে ১ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার, কাউনিয়া রেল সেতু পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ১৯ সেন্টিমিটার, ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় পাটেশ্বরী সোনাহাট সেতু পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি ৫ সেন্টিমিটার, নাগেশ্বরী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১ দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার ও চিলমারী নৌ-বন্দর পয়েন্টে ১ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি, পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি ও তালুক শিমুল বাড়ি পয়েন্ট ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে স্বল্পমেয়াদি বন্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, সোমবার রাত থেকে ১২ ঘণ্টায় জেলায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও দুদিন এমন বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিরপুর উপজেলার ১৫টি পয়েন্ট দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
কুড়িগ্রাম ধরলা পাড়ের মতিয়ার রহমান বলেন, “ধরলার পানি বাড়ার কারণে আমার পটল ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এখন সব পটলের গাছ মরে যাবে।
“এখন পানি না আসলে আরও অনেক টাকা পটল বিক্রি করে লাভবান হতে পারতাম। কিন্তু এবার অসময়ে পানি বৃদ্ধির কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।”
রাজারহাট তিস্তা পাড়ের আসলাম বলেন, “ভারী বৃষ্টিতে নদীর পানি খুব বেড়েছে। চরের অনেক বাদাম ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তোলা বাদামও ঘরে আনতে পারছি না। চরে সব ডুবে গেছে। বাদাম চাষিদের এখন কপালে হাত।”
তবে আসন্ন বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ।