যদি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে কাঠামোগত কোনো সমস্যা হয়, তবে তা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী।
Published : 02 Dec 2023, 04:02 PM
ভূমিকম্পের পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলের দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন হলের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬ ছিল জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলছে, ঢাকা থেকে ৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ছিল এর উৎপত্তিস্থল।
ভূকম্পনের পরপরই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের দুটি ও মেয়েদের একটি হলের দেওয়ালে ফাটল দেখতে পান শিক্ষার্থীরা।
হলগুলো হল- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল এবং নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল।
এ ছাড়া মেয়েদের শেখ হাসিনা হলের রিডিং রুমেও হালকা ফাটল দেখা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বঙ্গবন্ধু হলের পাঁচতলার দক্ষিণ পাশের ব্লকের ৫০৪ নম্বর কক্ষের সামনের করিডরের মেঝের দুটি টাইলস উঠে গেছে৷
একই তলায় নতুন ও পুরাতন ব্লকের সংযোগস্থলের করিডোরে ফাটল দেখা গেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ২০৪ ও ২০৫ নম্বর কক্ষের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচতলায় ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। এ ছাড়া ২০৯ নম্বর কক্ষেও ফাটল দেখা যায়।
এ ছাড়া নজরুল হলের দোতালার ২০৭ নম্বর কক্ষের দেওয়ালে, টিভি রুমের সামনের পিলারের সংযোগস্থলে নতুন ফাটল দেখা গেছে।
ফয়জুন্নেছা হলের পাঁচতলার ৫১১ ও ৫০৩ নম্বর কক্ষে ফাটল এবং চারতলার ৪০৩ নম্বর সামনের করিডোরে ফাটল দেখা গেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, “ভূমিকম্পের সময় আমরা নীচে নামতে পারিনি। কম্পন থামলে দক্ষিণ ব্লকে পাশাপাশি দুটি টাইলস উপরের দিকে হালকা উঠে থাকতে দেখা যায়।”
কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এহসান বলেন, “প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। ঝাঁকুনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা সবাই দৌড়ে বাইরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখি দেওয়ালে ছোটবড় কিছু ফাটল তৈরি হয়েছে।”
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুমাইয়া চৌধুরী আনিকা বলেন, “ছোটোখাটো কম্পন ভেবে রুমের দিকে আসছিলাম সবাইকে বলতে যে, এতো নড়ছে কেন! কিন্তু গোসলখানা থেকে রুমে আসার পথে দেখি ছাদ আর আমার রুমের পাশের জয়েন্ট আলাদা হয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর হল প্রভোস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।”
বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদ মজুমদার সরেজমিনে ফাটলগুলো পরিদর্শন করেছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “বিষয়টি দেখার জন্য দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি দেখছেন।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আবদুল লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। যদি কাঠামোগত কোনো সমস্যা হয় তবে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
“আমরা বিষয়টি ভালোভাবে দেখছি। যদি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে কাঠামোগত কোনো সমস্যা হয়, তবে তা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ।”
এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।