আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সেখানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
Published : 08 Feb 2024, 09:25 PM
ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক সংকট নিরসন ও ছাত্রাবাসে পানির সংকট সমাধানের দাবিতে সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষককে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সেখানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীদের স্লোগানে স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এমসি ক্যাম্পাস।
শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সংকট ও বঙ্গবন্ধু হলের পানি সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কোনো সমাধান না আসায় অধ্যক্ষকে অফিসে রেখে বাইরে তালা দেয় আন্দোলনকারীরা।
পরে তারা প্রশাসনিক ভবনের সিড়িতে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রুহেল আহমদ, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলামসহসহ পাঁচজন।
তাদের সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিটের বৈঠক শেষে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজ। পরে নাজমুলের মধ্যস্ততায় কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হন আন্দোলনকারীরা।
এ সময় অধ্যক্ষ আবুল আনাম শিক্ষার্থীদের উদ্যেশে বলেন, " তোমাদের সমস্যা মানে আমাদের সমস্যা। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি এক সপ্তাহের ভেতরে সমাধান করা হবে। আর বঙ্গবন্ধু হলের পানি সংকটের বিষয়টি রোববারের ভেতর সমাধান হবে।"
আন্দোলনে থাকা এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দিলোয়ার হোসেন রাহী বলেন, “দীর্ঘদিন থেকে ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক সংকট, হলের পানি সমস্যা নিরসনের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে একমত। দ্রুত এ সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে হবে।"
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাব্বির আহমদ বলেন, " দীর্ঘদিন ধরে কলেজের ছাত্রাবাসে পানির সংকট চলছে। বারবার অধ্যক্ষকে জানানোর পরও সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আজকের বৈঠকে আমরা পানি সংকট নিরসনে টিউবওয়েল বসিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম।
“অধ্যক্ষ বলেছেন টাকা নেই। একটা টিউবওয়েল বসানোর টাকা কলেজের ফান্ডে নেই, এই কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। তাই আন্দোলনে নেমেছি এবং অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেছি। পানির সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।"
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আবুল আনাম বলেন, “হলে পানি সমস্যা দূর করতে আমি পানির লাইন লাগিয়ে দিয়েছি। কিছুটা সমস্যা লাঘব হয়েছে। বাজেট না আসলে আমি তো কাজ করতে পারতেছি না।
“ইতিহাস বিভাগে টিচার নেই। এ ব্যাপারে আমি সচিব মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি। এটার সমাধান তো আমার হাতে নেই।"