সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর ওই বৃদ্ধকে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানায় পুলিশ।
Published : 06 Dec 2024, 08:25 PM
ষাটোর্ধ্ব অসুস্থ বাবাকে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে না রাখতে পেরে গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকায় গজারি বনে ফেলে রেখে যান মেয়ে ও জামাতা।
সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত ওই বৃদ্ধকে হোতাপাড়া এলাকার বিমান বাহিনীর ঘাঁটির উত্তর পাশের গজারি বনে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
তিনদিন পর স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম।
তিনি বলেন, পরে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দিয়ে বৃদ্ধকে গজারি বন থেকে উদ্ধার করে গোসল করিয়ে বুধবার রাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
বৃদ্ধ সাকিব আলী সরদার শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার চরডিপুর গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রশিদের ছেলে।
সাবেক গাড়িচালক এই সাকিব আলী এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
তার বরাত দিয়ে ওসি আব্দুল হালিম বলেন, সাকিব আলী সরদারের সম্পত্তি তার ছেলে কৌশলে লিখে নেন। এরপর থেকে বিরোধের জেরে ছেলে আর বাবার ভরণ-পোষণ করছিলেন না।
এ অবস্থায় সাকিব আলী বাড্ডা এলাকায় তার বড় মেয়ের কাছে আশ্রয় নেন।
সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃদ্ধের মেয়ে ও মেয়ের জামাতা আরেক মেয়ে ও ছেলের সঙ্গে পরামর্শ করে তাকে গাজীপুরের জয়দেবপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিকেবাড়ি বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত সোমবার মেয়ে ও জামাতা তাকে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।
তবে অসুস্থ থাকায় বৃদ্ধকে রাখতে অপারগতা প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ।
পরে স্থানীয় বিমান বাহিনীর ঘাঁটির উত্তর পাশের গজারি বনে বৃদ্ধকে ফেলে যান স্বজনরা।
ওসি বলেন, গজারি বনে বৃদ্ধকে নোংরা অবস্থায় পাওয়া যায়। তার পায়ে মল-মূত্র এবং প্রস্রাবের রাস্তায় ক্যানুলা লাগানো ছিল।
সাকিব আলীর বিষয়ে তিনি প্রথমে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোবারক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
জনবল এবং বাজেট না থাকার দাবি করে তাদের পক্ষে এ বিষয়ে কোনো কিছু করার নেই বলে ওসিকে জানিয়ে দেন মোবারক হোসেন।
পরে অসুস্থ সাকিব আলীকে পাঠানো হয় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
ওসি আব্দুল হালিম বলেন, হাসপাতালে বৃদ্ধের চিকিৎসার বিষয়ে তিনি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর ওই বৃদ্ধকে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
বিষয়টি শুনেছেন দাবি করে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল করিম বলেন, “হাসপাতালে তার খোঁজ নেওয়া হবে।”
গাজীপুরে তাদের হেফাজতে পুরুষ রাখার সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “সুস্থ হওয়ার পর তাকে ময়মনসিংহের সমাজসেবার হেফাজতে পাঠান হবে।”