“প্রাথমিক পরিশোধন ছাড়া যাতে কোনো ট্যানারির বর্জ্য সিইটিপিতে আসতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা হয়েছে”, বলেন তিনি।
Published : 18 Jun 2024, 11:26 PM
সাভারের চামড়াশিল্প নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) পুরোপুরি প্রস্তুত ও কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।
তার দাবি, এবার কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা ‘অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব’ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরা এলাকায় বিসিক চামড়া শিল্প নগরী পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন বলেন, “সিইটিপির সবগুলো মডিউলকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মেরামতপূর্বক ঢেলে সাজানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দিয়ে তরল বর্জ্যকে পরিশোধন করা হচ্ছে।
“বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থাও চালু রয়েছে। প্রাথমিক পরিশোধন ছাড়া যাতে কোনো ট্যানারির বর্জ্য সিইটিপিতে আসতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা হয়েছে।“
চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থাপনাকে পরিবেশবান্ধব দাবি করে জাকিয়া সুলতানা বলেন, “চামড়াশিল্প খাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে সরকার। এই টাস্কফোর্স এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবিড় তদারকের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।”
চামড়া শিল্পের বিষয়ে হাই কোর্টের চারটি নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন করার দাবিও করেন সচিব। বলেন, “বড় ট্যানারিগুলো ইতোমধ্যে ক্রোম রিকভারি ইউনিট (সিআরইউ) স্থাপন করেছে। পরিশোধন করা তরল বর্জ্যের মধ্যে ক্রোমিয়াম ও বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (বিওডি) ছাড়া অন্যান্য প্যারামিটারগুলো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই রয়েছে।
“পরিশোধন করা তরল বর্জ্যের সঠিক মান নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তরের পাশাপাশি সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও আমাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হবে।”
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিকের) চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা ও মো. শামীমুল হকও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চামড়া আসছে
ঈদের দ্বিতীয় দিনেও সাভারে চামড়া কারখানাগুলোতে রাজধানীর আশেপাশে থেকে কোরবানির পশুর চামড়া আসতে দেখা গেছে। ট্যানারির শ্রমিকরা কাঁচা চামড়াগুলো সংগ্রহ করে লবণ দিয়ে রাখছেন।
মেসার্স আজমেরি ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, “যেহেতু এই মুহূর্তে আমরা লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়া কিনছি, সেক্ষেত্রে প্রতিটি চামড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমে কিনছি। লবণযুক্ত চামড়া সরকার নির্ধারিত মূল্যেই কিনছি।”
কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, “প্রতি বছর চামড়া পাচারের যে গুঞ্জন শুনি, এবার তা এখনও শুনিনি।”
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক ও সালমা ট্যানারির মালিক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ ধারণা করছেন, আগামী দুই দিনে প্রায় ছয় লাখ চামড়া শিল্প নগরীতে প্রবেশ করতে পারে।
ঈদের দিন বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার কাঁচা চামড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে শিল্প নগরীতে প্রবেশ করেছে জানিয়ে বিসিক চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, “সাধারণত চামড়া নষ্ট হয় এতিম খানায় ও লবণের অভাবে। চামড়ার পচন রোধে এ বছর প্রতিটি এতিমখানায় বিনা মূল্যে লবণ সরবরাহ করা হয়েছে।
“দেশে পর্যাপ্ত লবণ মজুত রয়েছে।দামও গত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি দুই টাকা কম।”