অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া ২ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলাটি করেন।
Published : 10 Sep 2024, 06:10 PM
চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংকের একটি শাখার ভোল্ট থেকে ৭৫ লাখ টাকা খোয়া গেছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের ক্যাশিয়ারকে আসামি করে ব্যবস্থাপক থানায় মামলা করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে মতলব উত্তর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা খোয়া যাওয়ার ঘটনায় ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ ও অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।”
অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া ২ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলাটি করেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। ২৯ অগাস্ট দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না এলে তার মোবাইল কল করা হয়। তখন তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, আসতে দেরি হবে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে না এলে পুনরায় দীপংকর ঘোষের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তখন মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ওইদিন প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইলে ফোন দেওয়া হয়। তিনি জানান, তার স্বামী অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন।
কিন্তু ওইদিন বিকাল হয়ে গেলেও দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে উপস্থিত হননি। যার ফলে ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তার কার্যকলাপে সন্দেহজনক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া।
দীপংকর ঘোষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টে থাকা নগদ টাকা যথাযথ আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ৩০ অগাস্ট মতলব উত্তর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
১ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দিয়ে ভল্টের গ্রিল কাটা হয়।
পরে চাঁদপুরে ব্যাংকের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুব্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। সবার উপস্থিতিতে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। কিন্তু ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী এক কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। অর্থ্যাৎ ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।
মামলায় বলা হয়েছে, ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ কিছুদিন ধরে মাঝে মধ্যে একটি কাঁধের ব্যাগ নিয়ে আসতেন। ওই ব্যাগ নিয়ে তিনি অফিস ত্যাগ করতেন। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকায় ব্যাংকের ভল্টের একটি চাবি তার নিকট রক্ষিত থাকাতে কৌশল অবলম্বন করে নিজে অথবা অজ্ঞাতনামারা ব্যাংকের ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।
ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া বলেন, “আমি বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন এবং পুলিশ তদন্ত করছে বিষয়টি নিয়ে।”
দীপংকর ঘোষ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বাসিন্দা।