পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন শ্বাসকষ্ট, জ্বর, বুকে ব্যথাসহ নানা উপসর্গের রোগীও।
Published : 29 Sep 2024, 12:17 AM
মাদারীপুরে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। আক্রান্তের বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ।
আবহাওয়ার তারতম্যের পাশাপাশি ভ্যাপসা গরম ও দূষিত পানির কারণে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
পানিবাহিত রোগের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, বুকে ব্যথাসহ নানা উপসর্গ নিয়েও প্রতিদিন শতাধিক রোগী জেলা সদর হাসপাতালটিতে ভর্তি হচ্ছেন।
সেবা নিতে বহির্বিভাগেও বাড়ছে ভিড়। এ পরিস্থিতিতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও নার্সদের। তবে সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাওয়া কথা জানান তারা।
শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বেশি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার।
রোগ প্রতিরোধে বেশি করে তরলজাত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, ডায়রিয়া রোগীর জন্য জেলা সদর হাসপাতালে ছয়টি আসন থাকলেও বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৩২টি করা হয়েছে।
পুরাতন ভবনে দেওয়া হচ্ছে এই রোগের চিকিৎসা।
এছাড়া পানিবাহিত অন্য রোগীদের সেবা হয় ৬তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের নতুন ভবনে।
সীমান্ত জেলা শরীয়তপুরের চন্দ্রপুর থেকে আসা শওকত মিয়া বলেন, “আমার বাচ্চার ডায়রিয়া হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। প্রথমে খারাপ অবস্থা হলেও এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে।”
আকতার শেখ নামে একজন বলেন, “আমার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করি। স্যালাইনসহ ওষুধ চলছে, ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়ায় মেয়েটি দুর্বল হয়ে পড়ে। এখন কিছুটা সুস্থ।”
কালকিনি উপজেলার ভুরঘাটা থেকে আসা দেড় বছরের রাফসানের দাদি দিলরুবা বেগম বলেন, “প্রথমে কালকিনির একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। অবস্থা খারাপ হওয়ায় সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। নাতির জ্বর কমলেও পাতলা পায়খানা এখনো কমেনি।”
সদর উপজেলার হোগলপাতিয়ার বাসিন্দা মোহম্মদ হামেদ বলেন, “আমার নাতিকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। গতকাল থেকে পাতলা পায়খানা হওয়ায় এখানে এনে ভর্তি করেছি। হাসপাতালে রোগীর অনেক চাপ।”
জেলা শহরের সত্তর ঊর্ধ্ব বাসিন্দা কামাল উদ্দিন আহমেদ ডায়ারিয়া নিয়ে গত সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন।
কিছুটা সুস্থ হওয়ায় তিনি বাড়ি ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স কল্যাণী সরকার বলেন, “হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আসনের দ্বিগুণ রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।”
হাসপাতালটির তত্ত্ববধায়ক ও সিভিল সার্জন মুনীর আহম্মেদ খান বলেন, “দূষিত পানির ব্যবহারই পানিবাহিত রোগের অন্যতম কারণ। পঁচা-বাসি খাবার খেলেও এই রোগ হতে পারে। পানিবাহিত রোগ দেখা দিলে পর্যাপ্ত পরিমানে তরলজাত খাবার খেতে হবে।”
উপসর্গ দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।