চাকরির সুবাদে সৈকতের সঙ্গেও ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর জেরে সম্প্রতি আমিনুরের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানেন ওই নারী।
Published : 15 Jan 2025, 01:16 PM
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক তরুণ পোশাক শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে আটক করা হয়েছে আরেক তরুণকে। আটক তরুণের দাবি- তিনি নিহত পোশাক শ্রমিকের ‘প্রেমিকার সাবেক প্রেমিক’।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার ভাংনাহাটি গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল।
নিহত সৈকত (১৯) বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার হাওরাখালি চাঁন মিয়ার ছেলে। তিনি ভাংনাহাটি গ্রামের এমএইচসি এ্যাপারেলস্ লিমিটেডের কারখানার কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর ছিলেন এবং ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
আটক আপেল মাহমুদ আমিনুর (১৮) বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার টেবাগাড়ি গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে। তিনি চাকুরির সন্ধানে শ্রীপুরে এসে একই গ্রামের রোকেয়া আক্তারের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কারখানা থেকে ভাড়া বাড়িতে ফেরার সময় মোল্লা বাড়ি সড়কের মির্জা আলী জামে মসজিদের সামনে সৈকতকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইদা ইমরোজ ইমা বলেন, “সৈকতকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে ভাংনাহাটি এলাকা থেকে আমিনুরকে আটক করে। উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি।
আমিনুরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ওসি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, চাকরির সন্ধানে বগুড়া থেকে শ্রীপুর আসার পর ৬-৭ মাস আগে এক নারী পোশাক শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে আমিনুরের।
অপরদিকে একই কারখানার চাকরির সুবাদে সৈকতের সঙ্গেও ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এর জেরে সম্প্রতি আমিনুরের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানেন ওই নারী।
ওসি বলেন, তবে বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি আমিনুর, তিনি মানকসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং সৈকতকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
“সেজন্য মঙ্গলবার স্থানীয় একটি বাজার থেকে তিনশ টাকায় ছুরি কিনে সন্ধ্যার পর থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকে আমিনুর। পরে রাত ৯টার দিকে সৈকত বাড়িতে যাওয়ার সময় প্রথমে সৈকতের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করেন। পরে ছুরি দিয়ে তাকে উপর্যুপরি একাধিক আঘাত করেন।”
ওসি আরও জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার স্বজনদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।