ওই পুলিশ সদস্য জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬২ লাখ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন বলে জানায় দুদক।
Published : 20 May 2024, 10:12 PM
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজশাহীতে পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬২ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সোমবার দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন মামলাটি করেন।
দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে কনস্টেবল মেহেদি হাসান জমি বন্ধক রেখে ১৮ লাখ ও ৩৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ দেখিয়েছেন; যা অনুসন্ধানে অবৈধ বলে প্রমাণ পায় সংস্থাটি।
পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান নাটোর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। তিনি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার চকবিজলী গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, “আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেলে মেহেদী হাসানকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য বলা হয়। তখন মেহেদী হাসান ৪৮টি স্ট্যাম্পে লিখিত ও স্বাক্ষরিত চুক্তি সম্বলিত রেকর্ডপত্র দুদকে দাখিল করেন।
“এসব স্ট্যাম্পে আটজনের সঙ্গে জমি বন্ধক রাখা বাবদ ১৮ লাখ টাকা এবং আরও আটজনের কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ দেখানো হয়। স্ট্যাম্পগুলো ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাটের স্ট্যাম্প ভেন্ডার সাইদুল ইসলাম বিক্রি করেছেন বলে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে।
“তবে ট্রেজারি শাখা থেকে কেনা এসব স্ট্যাম্পের মধ্যে ৪২টি ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ও ৬ সেপ্টেম্বর ভেন্ডার সানোয়ার হোসেন দেলু এবং ছয়টি ২০১৭ সালের ২২ জুন শহীদুল ইসলাম নামের এক ভেন্ডারের কাছে সরবরাহ করা হয়; যা জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচাইয়ে প্রমাণ পায় দুদক।”
সানোয়ার হোসেন দেলুর বিক্রি করা রেজিস্ট্রার যাচাই করে মেহেদী হাসানের দাখিল করা স্ট্যাম্পগুলোর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মেহেদী হাসান অসৎ উদ্দেশ্যে তার সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে নকল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র ও বন্ধক সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপরাধ করেছেন বলে ভাষ্য দুদকের।
দুদক জেলা কার্যালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেহেদী হাসানের নামে মোট ৯১ লাখ ২৪ হাজার ২৫৪ টাকার অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। তার ঋণের পরিমাণ নয় লাখ ৩০ হাজার ৮৭০ টাকা। ঋণ বাদে অর্জিত সম্পদের মূল্য ৮১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮৪ টাকা।
এ ছাড়া তিনি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৩ টাকা পরিবারের পেছনে ব্যয় করেছেন। আর ঋণের কিস্তির সুদ পরিশোধ করেছেন এক লাখ ১৩ হাজার ৩৮৭ টাকা।
সব মিলিয়ে মেহেদীর মোট সম্পদ পাওয়া যায় ৯৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪ টাকা; যার মধ্যে গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৪ টাকা বলে জানায় দুদক।
পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী অসৎ উপায়ে আয়বহির্ভূত ৬২ লাখ নয় হাজার ৩০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন; যা দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে।
আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করায় মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
মামলাটি রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে দুদকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।