পঞ্চগড় জেলায় ২৯টি এবং ঠাকুরগাঁওয়ে একটি চা পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা রয়েছে।
Published : 19 Jan 2025, 06:51 PM
পঞ্চগড়ের চা বাগানে সুষ্ঠুভাবে ছাঁটাই কাজ পরিচালনার জন্য টানা দুই মাস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় কোনো চা পাতা উত্তোলন করা হবে না।
রোববার বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয় পঞ্চগড়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবে প্রুনিং বা ছাঁটাই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আগামী দুই মাস পরিচর্যার মাধ্যমে চায়ের গুণগত মান নিশ্চিত হবে।
২০০০ সালে পঞ্চগড়ে সমতল ভূমিতে চা চাষ শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারীতে ১০ হাজার একর জমিতে চা উৎপাদন শুরু হয়। প্রচণ্ড খরতাপ ও বাগান মালিকদের চা পাতার ন্যায্যমূল্য না দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে চলতি মৌসুমে গতবারের চেয়ে ৩৪ লাখ কেজি চা কম উৎপাদন হয়েছে।
অপরদিকে এক হাজার একর জমির চা বাগান নষ্ট করেছেন বাগান মালিকরা। নতুন মৌসুমে সব সংকট নিরসনসহ চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে চা বোর্ড ও জেলা প্রশাসন।
পঞ্চগড় জেলায় ২৯টি এবং ঠাকুরগাঁওয়ে একটি চা পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা রয়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড়ের চা শিল্পকে আরও গতিশীল করার জন্য ‘টি সফট মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন’ অ্যাপ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে কৃষক থেকে শুরু করে চায়ের নিলামের পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়।
পঞ্চগড় থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫৩ হাজার ৬০৪ দশমিক ৭৬ কেজি চা নিলামের জন্য অকশন সেন্টারে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। যার প্রতিদিনের গড় মূল্য ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬১ টাকা ৯০ পয়সা। যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিদিন রাজস্ব আয় হয় ১৩ লাখ ৭২ হাজার ২৮১ দশমিক ৮৯ টাকা।
চা বাগান মালিক আনিসুজ্জামান প্রামাণিক নতুন বলেন, “বিগত বছরগুলোতে আমরা নানা চক্রান্তের শিকার হয়েছি। বর্তমানে কিছুটা সমস্যা কেটেছে। এখন নতুনভাবে চা বাগানগুলো নিয়ে স্বপ্ন দেখছি। যেহেতু দেশে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা সরকারের কাছে আশা করি, নতুন মৌসুমে যাতে আমাদের পাতার ন্যায্যমূল্য পাই। এজন্য আমরা ভালোমানের পাতা সংগ্রহে কাজ শুরু করেছি।”
বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয় পঞ্চগড়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান জানান, গত মৌসুমে জেলায় ১ কোটি ৭৯ লাখ কেজি চা উৎপাদন হলেও চলতি মৌসুমে তা কমেছে। কম হওয়ার কারণ হিসেবে আমরা তিনটি কারণ- চাষিদের ন্যায্যমূল্য না দেওয়া, খরতাপ ও চোরাই পথে চা বিক্রির বিষয়টি পেয়েছি।
জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, পঞ্চগড়ে চা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এখানকার কৃষকরা যেন চা পাতার ন্যায্যমূল্য পায় সেই বিষয়টি সঠিকভাবে তদারকি করা হচ্ছে।