জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “মোবাইল ফোন ঘেঁটে দেখার কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। এমনটা কেউ করে থাকলে তাদেরকে নিষেধ করে দেওয়া হবে।”
Published : 27 Oct 2023, 10:30 PM
বড় দুটি দলের মহাসমাবেশ সামনে রেখে ঢাকার প্রবেশ মুখে দুটি মহাসড়ক ও একটি আঞ্চলিক সড়কে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ।
শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা পুলিশের দুটি তল্লাশি চৌকিতে ঢাকামুখী যাত্রীদের যানবাহনে তল্লাশির পাশাপাশি তাদের মোবাইলে ফোনে ব্যক্তিগত তথ্যও যাচাই-বাছাই করতে দেখা গেছে।
যদিও জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলছেন, “জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি চৌকিতে কার্যক্রম চালাচ্ছে পুলিশ। তবে কারও মোবাইল ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য তল্লাশি করার কোনো নির্দেশনা নেই। এমনটা কেউ করে থাকলে তাদের ভবিষ্যতের জন্য নিষেধ করে দেওয়া হবে।”
শনিবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি মহাসমাবেশ। এ কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ঢাকার প্রবেশ মুখগুলোর নারায়ণগঞ্জ অংশে তল্লাশি চৌকি স্থাপন করেছে জেলা পুলিশ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাব বিশ্বরোড এলাকার দুটি তল্লাশি চৌকিতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে বেশ কয়েকজন যাত্রীকে পরিবহন থেকে নামিয়ে তাদের মোবাইল ফোন তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে জানান, পুলিশ ব্যাগ তল্লাশির পর মোবাইল ফোনের লক খুলে দিতে বলে। তারপর ফোনের গ্যালারি ও ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট ঘাঁটে।
বিকাল ৪টার দিকে রাজধানীর প্রবেশ মুখ সুলতানা কামাল সেতুর পূর্বপাশে তারাব বিশ্বরোড এলাকায় স্থাপিত রূপগঞ্জ থানা পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে একটি মাইক্রোবাস থামানো হয়। মাইক্রোবাসে তল্লাশি ছাড়াও সাত যাত্রীর তিনজনের মোবাইল ফোনও ঘেঁটে দেখেন পুলিশ সদস্যরা। একজনের ফোনে বিএনপি সংশ্লিষ্ট একটি ছবি পেয়ে সবাইকে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে অন্তত ৩০ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
ওই মাইক্রোবাসের যাত্রী সালাউদ্দিন সরকার বলেন, ঢাকার মালিবাগে একটি বিয়ের দাওয়াতে যাচ্ছেন তারা। তারা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার একই গ্রামের বাসিন্দা। পথে পুলিশ তাদের মাইক্রোবাস থামিয়ে ব্যাগপত্র তল্লাশি করে এবং তাদের মোবাইল ফোন ঘাঁটেন।
“আমাদের একজনের ফোনে বিএনপির কী নাকি পেয়েছে এই কারণে দাঁড় করিয়ে রাখছে। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি আমরা।”
সাড়ে ৪টার দিকে আশ্বস্ত হওয়ার পর তাদের যেতে দেয় পুলিশ।
সাইনবোর্ড এলাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, “ঢাকায় কেন যাচ্ছি, কোথা থেকে আসছি, ঢাকার কোথায় যাব, এই পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ ঠিক আছে। কিন্তু মোবাইল ফোনের লক খুলে দিতে বলছেন পুলিশ সদস্যরা। বাধ্য হয়ে তাদের মোবাইলের লক খুলে দিতে হচ্ছে। তারা এইটা পারেন কিনা আপনার মাধ্যমে প্রশ্ন রাখলাম।”
মোবাইল ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য তল্লাশি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, “সমাবেশকে ঘিরে নাশকতার উদ্দেশ্যে কেউ বিস্ফোরক কিছু বহন করছেন কিনা সেজন্য তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মোবাইল ফোনে ঘেঁটে দেখার কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। এমনটা কেউ করে থাকলে তাদেরকে নিষেধ করে দেওয়া হবে।”