মামলার অন্য ধারায় তাদের অর্থ দণ্ড ও কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
Published : 25 Feb 2024, 07:14 PM
নাটোরে গৃহবধূকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তি ও তার শ্যালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রোববার আসামিদের উপস্থিতিতে জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ মোছা. কামরুন্নাহার বেগম এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সিরাজুল ইসলাম।
যাবজ্জীবনের পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও ২ বছর করে কারাবাসে থাকার রায় দেওয়া হয়। মামলার ভিন্ন দুটি ধারায় তাদের আরও চার বছর করে কারাদণ্ডের সঙ্গে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার লালপুরের হাবিবপুর এলাকার মো. আসাদুল ইসলাম (৩২) এবং তার প্রথম স্ত্রীর ভাই আড়বাব মধ্যপাড়া এলাকার মো. টুটুল আলী (২৫)।
মামলার নথির বরাত দিয়ে আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর লালপুরের ডহরশৈলা এলাকার একটি লিচু বাগান থেকে অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের গলায় কালচে জখম ও আঁচড়ের দাগ ছিল। তখন ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
এ ঘটনায় অর্জুনপুর বরমহাটি বিটের গ্রাম পুলিশ শ্রী রতন কুমার বাদী হয়ে লালপুর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায়, নিহত ওই নারী ছিলেন রাজশাহীর বাঘার সুলতানপুর এলাকার মো. জামাত আলী মেয়ে এবং নাটোরের লালপুরের হাবিবপুর এলাকার ইসমাইলের স্ত্রী লাকী খাতুন।
আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, লাকীকে হত্যার ১২ বছর আগে টুটুলের বোন মোছা. সোনিয়া খাতুনের সঙ্গে আসাদুল ইসলামের বিয়ে হয়। এদিকে, একই এলাকার ইসমাইল নামে এক ব্যক্তির স্ত্রী লাকী খাতুনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান আসাদুল।
ঘটনার ৬ মাস আগে আসাদুল ও লাকী পালিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি ভাড়া বাসায় থেকে দুজনেই ইশ্বরদী ইপিজেডে চাকরি শুরু করেন।
ঘটনার এক সপ্তাহ আগে আসাদুল ও লাকী খাতুন দুজনই তাদের আগের পরিবারে ফিরে আসেন।
এর চারদিন পর লাকী খাতুনকে নিয়ে আবারও ঈশ্বরদী যান আসাদুল। সেখান থেকে তার প্রথম স্ত্রীর ভাই টুটুল আলীকে মাগুরা থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে লাকীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
গুড়িগুড়ি বৃষ্টির রাতে শালা-দুলাভাই ওই নারীকে সঙ্গে নিয়ে লালপুরের ডহরশৈলা থেকে শ্রীরামগাড়ী রেল গেইটগামী রাস্তার পাশে নিয়ে গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
পরে লাকীর লাশ পাশের লিচু বাগানে ফেলে পালিয়ে যান আসাদুল ও টুটুল।
সরকারি কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন লালপুর থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ ফজলুল হক। তিনি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৯ জুন আসাদুল ও টুটুলকে অভিযুক্ত ও মামলায় গ্রেপ্তার আরেক আসামি পাবনার বক্তারপুরের মো. জাইদুল আলীর (৪০) অব্যাহতি চেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।”