নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা: সিরাজগঞ্জে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকের মৃত্যু

“নির্বাচনের আগে থানা চত্বরে দোয়াত কলমের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, আমার রক্ত নিয়ে হোলি খেলবে।”

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মারধরে আহত পরাজিত প্রার্থীর এক সমর্থক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বেলকুচি থানার ওসি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, রোববার রাতে ঢাকায় নেওয়ার পথে আব্দুল আলিমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত ৫২ বছর বয়সী আব্দুল আলিম উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে। তিনি পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকিরের সমর্থক ও নিকট আত্মীয়।

আটকরা হলেন-একই গ্রামের চাঁন মিয়া, তার ছেলে রাসেল ও চাচাত ভাই আবুল হোসেন।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আব্দুল আলিম মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকিরের কর্মী ছিলেন। ৮ই মে প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম সরকার জয়ী হন।

রাতে ফলাফল ঘোষণার পরই আমিনুলের কর্মী চাঁন মিয়া, রাসেল, আবুল, বাবলু, মান্নান, সাদ্দাম ও খালেক মেম্বরের নেতৃত্বে আব্দুল আলীমের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে।

তারা বলেন, ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় আলীমকে প্রথমে বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে এনায়েথপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকির বলেন, “নিহত আব্দুল আলীম সর্ম্পকে আমার চাচা।নির্বাচনের আগে থানা চত্বরে দোয়াত কলমের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম সরকার পুলিশের সামনে ঘোষণা দিয়েছিল, আমার রক্ত নিয়ে হোলি খেলবে। সেটা করতে না পেরে আজ আমার কর্মীদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলছে।”

এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বেলকুচি থানার ওসি মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, “নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর রাতে কামারপাড়া এলাকায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। মারধরে আহত আব্দুল আলিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।“

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।